মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে মিয়ান আরাফি নামের এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে হঠাৎ বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে আসেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী।
পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের পরপরই শনিবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে পল্টন কার্যালয়ে আসেন জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী। এ সময় সংঘর্ষে আহত বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ওই ব্যক্তি।
সংঘর্ষে আহত কিছু নেতাকর্মী বিএনপি কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়ায় তাদের খোঁজখবর নিতে সে সময় বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনও আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী ওই ব্যক্তিকে নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে প্রবেশ করে এবং তাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা বলে পরিচয় দেন। পরে সেখানে থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন ওই রহস্যজনক ব্যক্তি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে, তিনি তার পরিচয় বা তিনি আদৌ জো-বাইডেনের উপদেষ্টা কি না সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি ইশরাক।
বিষয়টি নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, সংঘর্ষের পর অনেক নেতাকর্মী আহত হয়। হাসপাতালে আমি তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করি এবং অন্যদেরও খোঁজখবর নিই। পরে আরও কিছু নেতাকর্মী আহতাবস্থায় বিএনপি কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছে শুনে তাদের খোঁজখবর নিতে সেখানে যাই। তার পরপরই সাবেক সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী দুজন ব্যক্তিকে নিয়ে আসেন।
তিনি আরও বলেন, তার (হাসান সারওয়ার্দীর) সঙ্গে আসা একজন নিজেকে মার্কিন প্রেসিডিন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা বলে পরিচয় দেন। আহতদের সঙ্গে কথাও বলতে চান। আহতরা সে সময় কার্যালয়ের নিয়মিত ব্রিফিং কক্ষেই অবস্থান করছিলেন। তাই তাদের সঙ্গে কথা বলার পর সেখানে থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। এ সময় তাদের সঙ্গে আমাকেও বসতে বললে সে পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে আমিও অংশ নেই। এর বাইরে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে আমি আর তেমন কিছু জানি না।
এদিকে সন্ধ্যায় এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য পুরোপুরি অসত্য।’
তিনি বলেন, ‘ওই ভদ্রলোক যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হয়ে কথা বলেন না। তিনি সরকার সংশ্লিষ্ট কেউ নন।’
এ ঘটনায় রাতেই বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়েছে, আজ নয়াপল্টনে মহাসমাবেশে পুলিশের হামলা, টিয়ারগ্যাস ও গুলির পর সন্ধ্যায় বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দিয়ে যিনি সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রেখেছেন তা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টি গোচরে এসেছে।
এতে আরও বলা হয়, তিনি জানিয়েছেন এ বিষয়ে বিএনপি একেবারেই অবগত নয় এবং এই ব্যক্তির বিষয়ে দূতাবাস থেকে কোনো রকম পূর্বধারণা মহাসচিবকে অবগত করা হয়নি, বিধায় বিএনপি তার বক্তব্যের বিষয়ে কোনোভাবেই অবহিত নয়।
এর আগে সন্ধ্যার পর কয়েকটি গণমাধ্যম বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ও ওই ব্যক্তির একটি ভিডিও নিয়ে খবর প্রকাশ করে।
ভিডিওতে দেখা যায়, গোলাপি রঙের শার্ট পরিহিত এক ব্যক্তি ইংরেজিতে কথা বলছেন। পাশে বসে আছেন ইশরাকসহ আরও কয়েকজন।
ওই ব্যক্তি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনী উপদেষ্টা বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে তার নাম মিয়ান আরাফি বলে দাবি করা হয়।
মন্তব্য করুন