গত শনিবার মহাসমাবেশে হামলা, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসায় পুলিশি তল্লাশির নামে আসবাবপত্র ভাঙচুর, পরিবারের সদস্যদের হয়রানিসহ সারাদেশে অব্যাহত গ্রেপ্তার-খুন ও মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
রোববার (২৯ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, একদফা দাবিতে শনিবার ঢাকায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশ কর্তৃক গুলি, টিয়ারশেল, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং জাতীয়তাবাদী যুবদলের একজন নেতা নিহত ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত এবং গ্রেপ্তার করার প্রতিবাদে সারাদেশে শান্তিপূর্ণ হরতাল ডেকেছিল বিএনপি।
কিন্তু হরতালের আগের রাতে শনিবার এবং পরের দিন বিএনপির উল্লিখিত নেতাকর্মীদের বাসায় অন্যায়ভাবে তল্লাশিসহ ভাঙচুর শুরু করেছে। এ ধরনের আচরণ মুক্তিযুদ্ধের আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী করত। বর্তমান সরকারও তাদের অনুগত পেটোয়া পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিএনপি ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর পাকিস্তান বাহিনীর মতো নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জুলুমের সকল সীমা অতিক্রম করেছে।
তারা বলেন, এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে, বর্তমান অবৈধ সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আতঙ্কিত। তারা এখন গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে রাষ্ট্রীয় শক্তিকে ব্যবহার করছে। যা অসাংবিধানিক ও অমানবিক। নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে অন্যায়ভাবে তল্লাশি ও ভাঙচুরের মাধ্যমে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের মানুষসহ গোটা বিশ্ব মিডিয়ায় দেখেছে যে, শনিবার ঢাকায় বিএনপি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে মহাসমাবেশ করছিল। কিন্তু পুলিশের কিছু অতি উৎসাহী সদস্য আগ বাড়িয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারশেল, জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে এমনকি গুলিবর্ষণও করেছে। এতে যুবদলের একজন নেতা নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও প্রায় দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মী। প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা নিন্দনীয় ও ন্যক্কারজনক।
ইউট্যাবের দুই শীর্ষ নেতা বলেন, সভা-সমাবেশ করা যে কোনো রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার। আর পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তব্য তাতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। এমনকি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পবিত্র দায়িত্ব। কিন্তু সম্প্রতি বিএনপিসহ বিরোধীদলের কর্মসূচিতে হামলা-মামলা ও বাধা দেওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি দলের হয়ে পক্ষপাতমূলক ও অপেশাদারমূলক আচরণ করছে।
ইউট্যাব নেতারা আরো বলেন, আমরা শিক্ষক সমাজের পক্ষে সরকারকে বলব, বিরোধীদলের সভা-সমাবেশে বাধা না দিয়ে গণতন্ত্রের পথে হাঁটুন। অবিলম্বে পদত্যাগ করে দেশে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। একইসঙ্গে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলব- আপনারা পেশাদার ও সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করুন। অন্যথায় দেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না।
মন্তব্য করুন