চিকিৎসা খাতের নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেছেন, এতো বিল পাস করে হবে কি? কোথাও জবাবদিহীতা নাই। কারো কাছ থেকে সদুত্তর পাওয়া যায় না। শুধুই সংসদে আলোচনায় কোন কাজ হয় না। সরকারি হাসপাতালে রোগী গেলে ডাক্তাররা সিট নাই বলে বেসরকারী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সরকারের বড় পদে থাকলে সিঙ্গাপুর ও ব্যাংকক চলে যেতে পারবেন সরকারি খরচে কিন্তু সাধারণ লোকেরা যাবে কোথায়?
আজ মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) বিল-২০২৩ এর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। পৃথক বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান তিনি।
ফিরোজ রশীদ বলেন, কুমিল্লা থেকে বাবা স্কুটার চালিয়ে একটি শিশুকে ঢাকায় নিয়ে আসছে। শিশুটির অক্সিজেনের অভাব ছিল। এই হাসপাতালে যায় অক্সিজেন নেই, ওই হাসপাতালে যায় দেখে নেই। শিশু হাসপাতালে বলে সিট নাই, বাইরে থেকে আনসার বলে দিল ওই হাসপাতালে যান। পরে বাচ্চাটি মারা গেলো। সাংবাদিক গিয়ে দেখল আটটি সিট খালি। ডাক্তাররা রোগী আসলে বলবে সিট নাই, তার হাসপাতালে পাঠিয়ে দেবে। আজ পর্যন্ত কি কোন ডাক্তারকে বদলি করতে পেরেছেন? পারবেন না। কারণ ওখানেও সব আওয়ামী লীগ ঢুকে গেছে। ডাক্তারদের মধ্যেও আওয়ামী লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ।
পেশাজীবীদের মধ্যে দলীয়করণের প্রতি ব্যঙ্গ করে কাজী ফিরোজ বলেন, হায়রে স্বাধীনতা, কি চমৎকার এটা শব্দ। নামের আগে স্বাধীনতা লাগিয়ে দিলে এই দেশে আর কোথাও কোন জবাবদিহি করতে হয় না। শুধুমাত্র লিখবেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, স্বাধীনতা হকার্স পরিষদ, স্বাধীনতার সংসদ হয়ে গেলো। জেলা পর্যায়ে কোন হাসপাতালে চিকিৎসা হয় না। গেলেই বলে ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চলে যাও। সেখান থেকে বলে ঢাকা চলে যাও। কিন্তু প্রাইভেট হাসপাতালে গেলে তো লাখ লাখ টাকা লাগে। আমাদের মহামান্য তো এখন সিঙ্গাপুরে আছেন। প্রায় দেড়-দুই কোটি টাকা বিল আসবে। দুদিন আগে মহামান্য হওয়ার আগে উনি দুই টাকাও পাইতেন না। আল্লাহ বানায়ে দিছেন, এখন যতো টাকা লাগুক, তিনবার বুক ফাড়লেও উনি টাকা পাবেন। কিন্তু গরীবকে তো কেউ টাকা দেয় না।
বেতন বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে ফিরোজ রশিদ বলেন, পুলিশের গুলিতে নিহত শ্রমিক শুধুমাত্র বেতনের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিল। ক্ষুধার যন্ত্রণায় রাস্তায় নেমেছিল। তাদেরকে গুলি করে মারা হল। মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের জন্য বিজেএমইএ- নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে সমস্ত শ্রমিককে গুলি করে আহত করেছে এবং যারা পঙ্গু হয়েছে তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। নইলে দেশ চলবে না। এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল জনগণের জন্য। পাকিস্তানের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমরা অস্ত্র ধরেছিলাম। আজকে তার থেকে বহুগুণ বৈষম্য চলছে।
মন্তব্য করুন