গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ একলা একলা গোল দিতে চায়, প্রতিপক্ষ রাখতে চায় না। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো এবারও আরেকটি ‘তামাশার’ নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু এ দেশের মানুষ আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেবে না, মেনেও নেবে না।
রোববার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিলপরবর্তী এক সমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোর দেশব্যাপী চলমান ৪৮ ঘণ্টা হরতালের সমর্থনে পল্টন মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিজয়নগর মোড় ঘুরে সেগুনবাগিচা হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, একতরফা তপশিল দিয়ে আপনারা উৎসব শুরু করেছেন। আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন, এটা শুনে গাধারাও হাসে। অনতিবিলম্বে তপশিল স্থগিত করুন। এখনো কয়েক দিন আছে। আলোচনা করুন, সিদ্ধান্ত নিন। সোজা পথে হাঁটলে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়ার সুযোগ আছে। কীভাবে নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে সেটা নিয়ে ভাবুন।
তিনি আরও বলেন, এবার জনগণ ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত। সুতরাং নির্বাচনের নামে আরেকটা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো তামাশা এ দেশের মানুষ কোনোভাবেই হতে দেবে না, মেনেও নেবে না।
সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আওয়ামী লীগ একলা একলা গোল দিতে চায়, প্রতিপক্ষ রাখতে চায় না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের খেলতে চান, কিন্তু মাঠে কোনো প্রতিপক্ষ রাখতে চান না। খেলোয়াড় থাকলেই সমস্যা। মাঠে তিনি শুধু রাখবেন দলের লোক। আর উনি খালি গোল দেবেন।
তিনি বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) প্রতিপক্ষকে স্টেডিয়ামের বাইরে রেখেছেন। তাদের জেলখানায় রেখে দিয়েছেন। এখন একতরফা নির্বাচন দিতে চাচ্ছেন। আরেকটি একতরফা নির্বাচন করলে শুধু অর্থনৈতিক সংকট নয়, দেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একটা ভয়ংকর কূটনৈতিক সংকটে পড়বে। এই সরকার দেশের মানুষ ও দেশের অস্তিত্বকে নিয়ে বাজি ধরছে শুধু ওই গদি টিকিয়ে রাখার জন্য।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, এই সরকার আবারও একটি একতরফা নির্বাচনের পথে হাঁটছে। এর অংশ হিসেবে রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া একতরফা তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে। গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক দলসহ দেশের মানুষ এই তপশিল প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ, তারা এবার আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেবে না।
গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পুর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. বেলায়েত হোসেন বেলাল এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থনৈতিক সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ও জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আবু ইউসুফ সেলিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন, নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাক্কারুল ইসলাম নবাব, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া প্রমুখ।
মন্তব্য করুন