বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সাহসী, দেশপ্রেমিক, বীর পুরুষদের ঐতিহাসিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় সাফল্যের গৌরব গাঁথার দিন ২১ ফেব্রুয়ারি, ভাষা আন্দোলনের দিন।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির, সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও কামাল হোসাইন, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, ড. মোবারক হোসাইন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য আবদুস সালাম প্রমুখ নেতারা।
গোলাম পরওয়ার বলেন, যে কোনো জাতির সভ্যতা নির্মাণে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, দেশপ্রেমিক সাহসী পুরুষরা ইতিহাস রচনা করে যায়। ভাষার জন্য যারা সংগ্রাম করেছেন, তাদের প্রায় সবাই ছিলেন মুসলিম ছাত্রনেতা। অধ্যাপক গোলাম আযম, প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম, দেওয়ান মুহাম্মদ আজরফ, নুরুল হক ভুইয়া, মওলানা আকরাম খাঁ তারা সকলেই মুসলিম ছিলেন। পরে কিছু ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী বিদেশি মতবাদের ধারক-বাহকরা আন্দোলনের মধ্যে ঘাপটি মেরে, এই আন্দোলনকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। এমনকি ভাষা আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছিলেন, তারা সবাই মুসলমান ছিলেন। তাদের স্মরণতো তাদের সংস্কৃতিতেই তা পালিত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে অপসংস্কৃতি আমদানি করে, ইসলামী আকিদাবিরোধী ধারা তৈরি করে, তাদের স্মারণ করার ধারা চলছে। যার সঙ্গে শিরক জড়িত।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস আলোচনা করতে গেলেই অধ্যাপক গোলাম আযমের কথা সামনে আসবে। ১৯৪৬-৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফজলুল হক মুসলিম হলে ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি নির্বাচিত জিএস ছিলেন। তারপর ১৯৪৭-৪৮, ১৯৪৮-৪৯ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর জিএস ছিলেন। ভারত-পাকিস্তান আলাদা হওয়ার পর থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি সব আন্দোলন, সংগ্রামে ছাত্রনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৪৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান, যখন পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে আসলেন, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সেখানে ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দিয়েছিলেন ডাকসুর তৎকালীন জিএস অধ্যাপক গোলাম আযম। যার ড্রাফট তৈরি করেছিলেন, সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা আবদুর রহমান চৌধুরী। পরে তিনি বিচারপতি হয়েছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়গুলো তুলে ধরেছিলেন।
আজও ২১ নিয়ে এত আলোচনা হয়, কখনই সঠিক ইতিহাসটা মানুষের সামনে তুলে ধরা হয় না। এটাতো ইতিহাসের অংশ। এই ইতিহাস ছিনতাই করার সুযোগ নেই। অথচ অধ্যাপক গোলাম আযম যে ঢাকসুর জিএস ছিলেন, সেটা ঢাকসুর ভিপি জিএসের তালিকায় থাকবে না? এগুলো মুছে দিয়ে, তারা আবার একুশের বিশাল ফেরিওয়ালা হয়ে জাতির নেতৃত্বের আসনে প্রচার করে, বলেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আজকের এই দিনে সব ভাষাসৈনিকদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এদেশের সংগ্রামী মুসলিম জনতা ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। তারা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
মন্তব্য করুন