বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, পবিত্র মাহে রমজানের প্রকৃত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে তাক্বওয়া ও আত্মশুদ্ধি অর্জন ও বদরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক ওহির সমাজ গঠনে দলমত নির্বিশেষে সকলকে সর্বাত্মক সংগ্রামে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াত আয়োজিত ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মাহফুজুর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উত্তরা পূর্ব থানা নায়েবে আমীর সুলতান আহমেদ, সেক্রেটারি হামিদুল হক, কর্মপরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন,
আজ ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর দিবস। দ্বিতীয় হিজরিতে ‘বদর’ নামক স্থানে এই দিনে মুসলমান ও কুরাইশ বাহিনীর মধ্যে ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ইতিহাসে তা ‘গাজওয়ায়ে বদর’ নামেও পরিচিত। বদরের যুদ্ধ ছিল মুসলমান ও কুরাইশদের মধ্যে প্রথম স্বশস্ত্র যুদ্ধ। এ যুদ্ধ রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ যুদ্ধের ফলে ইসলামের যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধিত হয় এবং চারিদিকে ইসলামের বিজয় দামামা বেজে ওঠে। তাই বদরের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, বদরের যুদ্ধ ছিল মুসলিম ও ইসলামের অস্তিত্ব রক্ষার যুদ্ধ। এ যুদ্ধে মুসলিমরা পরাজিত হলে পৃথিবী থেকে চিরতরে ইসলামের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেত। এ যুদ্ধে বিজয় আরবের মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়। ইসলামের প্রতি আরববিশ্ব সর্বোপরি তাবৎ বিশ্ববাসীর আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়। বদরের যুদ্ধ মুসলমানদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে, বিশ্বজয়ের পথ মসৃণ করে ও মিথ্যার ওপর সত্যের বিজয়ের মাধ্যমে সর্বোত্তম ইতিহাস রচনা করে। তাই ঐতিহাসিক বদরের চেতনায় দেশপ্রেমী ও ইসলামী শক্তিকে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তিনি দেশে অগণতান্ত্রিক শক্তির পরিবর্তে গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে নতুন করে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।
এদিকে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা দক্ষিণের ওলামা বিভাগের উদ্যেগে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে পবিত্র কোরআনুল কারিম বিতরণ করা হয়। ওলামা বিভাগ জেলা সভাপতি মাওলানা মোবিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ওলামা বিভাগের জেনারেল সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান আল মাদানি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলার প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ শাহিনুর ইসলাম ও এবিএম কামাল হোসাইন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খলিলুর রহমান আল মাদানি বলেন, বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ হিসেবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনুল কারিম নাযিল করেছেন। তাই এই মহাগ্রন্থকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করে বাস্তবজীবনে প্রতিফলন ঘটানোর মধ্যেই রয়েছে মানবতার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ ও মুক্তি। তিনি কুরআনের রাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাস পবিত্র মাহে রমজান। রমজানের প্রকৃত শিক্ষাই হচ্ছে নিজেরদের নফসের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা। পবিত্র মাহে রমজানে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি অর্জনের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন