বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান আইনজীবী নুরুল খানকে ২০২২ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত দেশটির উচ্চকক্ষ বা লেজিসলেটিভ কাউন্সিল নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছিল লেবার পার্টি। কিন্তু ঈর্ষান্বিত হয়ে তার বিরুদ্ধে লেবার পার্টির কাছে ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে বেনামি ই-মেইল করে একটি গোষ্ঠী। ই-মেইল পেয়ে সত্যতা যাছাই না করেই তার প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করে লেবার পার্টি। পরে তিনি ওই-ই মেইল পাঠানো ব্যক্তির তথ্য চেয়ে গুগল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। এ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল আদালতে মানহানির মামলা করেন নুরুল খান। শুনানি শেষে বেনামি ও ভুয়া তথ্যের ই-মেইল বিষয়ে নুরুল খানকে নির্দোষ প্রমাণ করে রায় দেন অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল আদালত।
সূত্র জানায়, একটা নোংরা অভিযোগের ভিত্তিতে নুরুল খানের দল তার প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করলে ২০২৩ সালের এপ্রিলের শুরুতে তিনি বেনামি-ই-মেইল প্রেরকের পরিচয় জানাতে গুগলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এরপর আদালত বেনামি ই-মেইল প্রেরকের পরিচয় জানাতে ২০২৩ সালের ১১ জুলাই গুগলকে আদেশ দেন। আদেশের পর বেনামি ই-মেইলের বিস্তারিত নথিপত্র হস্তান্তর করে গুগল।
গুগলের সরবরাহ করা নথিপত্র অনুযায়ী ওই বেনামি ই-মেইলের প্রেরক যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়কের ব্রুকলিনে বসবাসকারী মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর ভিত্তিহীন বেনামি-ই-মেইল প্রেরক সাইফের কাছে ৮০ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আইনগত দাবি জানান। কিন্তু বিবাদী সাইফ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্ষমাসহ কোন সমঝোতায় আসেননি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত নুরুল খান অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল কোর্টে বিবাদীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।
গত ১৯ এপ্রিল বিচারপতি বুটন নুরুল খানের পক্ষে রায় দিয়েছেন। ফেডারেল কোর্টের এই রায়ের মাধ্যমে এএলপি প্রার্থী নুরুল তার রাজনৈতিক জীবনকে ধূলিসাৎ করার উদ্দেশে নির্বাচনের আগে বেনামি ডার্ট শিট তৈরির পেছনের চক্রান্তকারীদের খুঁজে বের করতে উল্লেখযোগ্য বিজয় অর্জন করেছেন।
খান ফেডারেল কোর্টের বিচারপতির কাছ থেকে প্রাপ্ত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তার সম্মানহানি সম্পর্কে তাদের বোঝার জন্যও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। বিজয় অর্জনে তার আইনি দলসহ তাদের নির্দেশনাকারী আইনজীবী, মিসেস রুমানা জাহান এবং কাউন্সেল, মিস্টার জাস্টিন ক্যাসটেলানকেও তাদের অবিচল নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন নুরুল খান।
তিনি অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল কোর্টের রায় অনুসারে ক্ষতিপূরণ এবং খরচ পুনরুদ্ধার করতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি আদালতের মাধ্যমে এই রায় কার্যকর করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুরুল খানের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে তার প্রতি লেবার পার্টির সমর্থন প্রত্যাহারের বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বাঙালি সম্প্রদায়ের ভোটারা। তারা লেবার পার্টির কাছে জবাব চেয়ে একটি পিটিশনও দিয়েছিল।
নুরুল খান কালবেলাকে বলেন, আমি ইতোমধ্যেই নিউইয়র্কের স্বনামধন্য আইন সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। তারা অস্ট্রেলিয়ান আদালতের আদেশ কার্যকর করার জন্য সহায়তা করতে আগ্রহী। কারা বেনামি ইমেইল পাঠিয়ে তার সম্মনহানি ও নির্বাচনে জয়ী হতে দেননি তাদের খুঁজে বের করতে চান নুরুল খান।
মন্তব্য করুন