আল্লাহ সর্বশক্তিমান৷ তাঁর দয়া অফুরন্ত। তাঁর রহমত অগণিত। রাব্বুল আলামিনের দয়ার সাগরে দুনিয়ার সব মানুষ, সব মহাশক্তি ডুব দিলেও বরকতে পরিপূর্ণ মণিমুক্তা পাবে, কিন্তু কূল পাবে না। কারণ, তাঁর দয়ার সাগরের গভীরতার কোনো সীমা নেই। সৃষ্টির প্রতি তাঁর মায়ার কোনো পরিমাপ নেই।
দুনিয়ার সব মালিকের কাছে তার শ্রমিকরা একটু বেশি মজুরি চাইলে, সুবিধা চাইলে তারা নাখোশ হন। কেউ কেউ ক্ষিপ্ত হন। অনেকে আবার অবিচারও করেন। কিন্তু দু’জাহানের মালিকের প্যাটার্ন ভিন্ন। তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের পাল্লা অতুলনীয়। তাঁর কাছে তাঁর গোলামরা যত বেশি চায়, তিনি তত বেশি দেন। খুশি হন। আল্লাহ ইরশাদ করেন, বান্দা তুই যত বেশি চাইবি, আমি তত বেশি খুশি হই। রহমতের দ্বার খুলে দিই। আমি পরম করুণাময়।
কোরআনের ভাষায়, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। আর যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে, তারা অচিরেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে।’ (সুরা মু’মিন, আয়াত : ৬০)।
আল্লাহর কাছে চাইতে হয় দোয়ার মাধ্যমে। নতচিত্তে। অবনত মস্তকে। রব্বেকা’বা ইরশাদ করেন, ‘আমি দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করে। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৬)। হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, দোয়া সব ইবাদতের মূল।
দোয়ার সময় অধিকাংশ মানুষ যে ভুল করে থাকেন
দোয়া কবুলের নির্ধারিত কোনো মুহূর্ত নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা, ইশা থেকে ফজর—বান্দা যখনই আল্লাহর দরবারে হাত পাতে, তিনি সাড়া দেন।
দোয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই নির্দিষ্টভাবে কোনোকিছুর নাম উল্লেখ করে আল্লাহর কাছে চাইতে থাকেন। কেউ কেউ বলে থাকেন, আল্লাহ আমাকে এই চাকরিটা দেন, আমাকে এই মেয়েটির সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন বা আমাকে ওই বিশ্ববিদ্যলয়ে চান্স পাইয়ে দেন।
এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামী স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, দোয়া করার সময় আল্লাহর কাছে আপনার চাওয়াকে একদম ফিক্সড করে ফেলবেন না। নবীজি (সা.) সাহাবাদের দোয়া শিখিয়েছেন এভাবে যে, ‘আল্লাহ আমি আপনার কাছে উভয় জগতের শান্তি চাই।’ কোরআনেও আল্লাহ তাওয়ালা এই শিক্ষা দিয়েছেন।
কাজেই শান্তি কত টাকায় হবে, কীভাবে হবে, কোন পন্থায় হবে, কোন মেয়ের মাধ্যমে হবে, সেটা আল্লাহ জানেন। কিন্তু আপনি যদি ফিক্সড করে কোনোকিছু চান, আপনার সেই চাওয়া ভুল হতে পারে।
বিষয়টি বুঝাতে গিয়ে একটি গল্পের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এক যুবক চেয়েছিল যে, ‘আল্লাহ আমাকে এমন একটা জীবন দাও যেখানে আমার দুই হাত ভর্তি শুধু টাকা আর টাকা থাকবে এবং দুই পাশে শুধু নারী আর নারী থাকবে।
তো আল্লাহতায়ালা তাকে কোনো একটা মহিলা কলেজের নারী স্টাফদের বাসের হেলপার বানিয়ে দিলেন। এ জন্য তার হাতে টাকা আর টাকা, পাশে মহিলাও। তবে টাকাগুলো অন্যদের, নারীরাও অন্যদের। কষ্ট ছাড়া তার কিছুই নেই। এটা তার ভুল চাওয়ার ফলাফল। কাজেই দোয়া করতে হবে কল্যাণের। কোনো কিছু ফিক্সড করে দোয়া করা যাবে না। এটা আদবের খেলাফ।
মন্তব্য করুন