ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:০২ পিএম
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নাম রাখার ক্ষেত্রে যে ভুলগুলো কখনোই করবেন না

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

মানুষের জীবনে এমন কিছু জিনিস আছে, যেগুলোর প্রভাব সে প্রতিদিন অনুভব করে; তবে কখনো খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে তা ভাবে না। এর মধ্যে একটি হলো নিজের নাম। প্রতিদিন, প্রতিটি মুহূর্তে মানুষ তার নাম শুনে, নামে সাড়া দেয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই নামই তাকে পরিচিত করে তোলে। এমনকি মৃত্যুর পরও নামটিই রয়ে যায়, মানুষ তার নামেই তাকে স্মরণ করে।

আর শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলামে নামের গুরুত্ব শুধু সামাজিক পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি আখিরাতের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। হাদিসে বলা হয়েছে, কেয়ামতের দিন মানুষকে তার নাম ও পিতার নাম ধরে ডাকা হবে (আবু দাউদ)। ফলে, শিশুর নামকরণ কোনো সাধারণ বিষয় নয়; বরং এটি একটি ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব।

আধুনিক সময়ে অনেকেই না বুঝে বা ভুল ধারণায় এমন কিছু নাম সন্তানের জন্য বেছে নেন, যেগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়; এমনকি এগুলো কখনো ভয়াবহ বিপদের কারণ হতে পারে।

বোখারি শরিফের বরাত দিয়ে রাজধানীর জামিয়াতুল ইসলামিয়া বায়তুস সালামের ফতোয়া বিভাগীয় প্রধান মুফতি আব্দুর রহমান হোসাইনী কালবেলাকে জানান, প্রসিদ্ধ তাবেয়ি হজরত সাইদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (রাহি.) বলেন, আমার দাদা রাসুল (সা.)-এর দরবারে গেলে নবীজি (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমার নাম কী? তিনি বলেন, আমার নাম হাযান (আরবিতে এই নামের অর্থ হলো দুঃখ, কষ্ট, ক্লেশ)। তখন নবীজি (সা.) তাকে বললেন, না তোমার নাম সাহাল (আরবিতে এই নামের অর্থ হলো সহজ-সরল)। কিন্তু হাযান বললেন, আমার বাবা আমার যে নাম রেখেছেন সেই নামটি আমি পরিবর্তন করতে চাই না। তাই এ কথা শুনে নবীজি (সা.) চুপ থাকলেন এবং তার নাম হাযান থেকে গেল।

এ প্রসঙ্গে হাযানের নাতি সাইদ ইবনুল মুসাইয়্যিব বলেন, তারপর থেকে আমার দাদা, আমার বাবা এবং আমাদের বংশে সেই কষ্ট-ক্লেশের প্রভাব এখন পর্যন্ত রয়ে গেছে।

মুফতি আব্দুর রহমান জানান, মুসলিম শরিফের এক হাদিসে এসেছে, জয়নব বিনতে আবি সালামা বলেন, আমার নাম ছিল বাররা। এই নামের অর্থ হলো একদম পুতপবিত্র। নবীজি (সা.) এ নাম শুনে বললেন, তোমরা নিজেদের পবিত্রতা নিজেরাই বর্ণনা করো না। তোমাদের মধ্যে থেকে কারা আসলে পবিত্র, সেই কথা কেবল আল্লাহই ভালো জানেন।

এ সময় রাসুলকে (সা.) জিজ্ঞেস করা হলো, তাহলে আমরা এই মেয়ের নাম কী রাখব? উত্তরে তিনি (সা.) বলেন, তার নাম রাখো জয়নব।

উল্লিখিত হাদিসের আলোকে শায়খ আব্দুর রহমান বলেন, যেসব নামের অর্থ কষ্ট-ক্লেশ হয় বা যেসব নামের দ্বারা অহংকার কিংবা কোনো অপছন্দনীয় বিষয় ফুটে ওঠে, সেগুলো পরিহার করতে হবে। কারণ, নামের প্রভাব শুধু ব্যক্তি নয়, বরং তার বংশ পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে পারে। তাই সুন্দর অর্থবহ ইসলামি নাম রাখতে হবে।

নাম রাখার ক্ষেত্রে ভুল করা যাবে না উল্লেখ করে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, অনেকে সন্তানের নাম আব্দুস সাত্তার বা এ জাতীয় নাম রাখতে চান না। তারা মনে করেন, এরকম নাম রাখলে একটু খেত বা বয়স্ক মনে হয়। তাই তারা আনকমন নাম রাখতে গিয়ে টাল্টু,বল্টু, স্ক্রু ইত্যাদি নাম রাখেন।

নামের অর্থের প্রভাব ব্যক্তির ওপর পড়ে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আপনি যদি টাল্টু নাম রাখেন, তবে সে টল্টুর মতো লাফাতেই পারে। কাজেই সন্তানের সুন্দর অর্থবহ ইসলামি নাম রাখা পিতা-মাতার কর্তব্য।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুর্ঘটনার কবলে আনসার সদস্যদের বহনকারী বাস

অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ পদে নিয়োগ দিচ্ছে সিটি গ্রুপ

চট্টগ্রাম ও সিলেটে নিয়োগ দিচ্ছে প্রাণ গ্রুপ

দক্ষিণ আফ্রিকায় পানশালার কাছে বন্দুক হামলা, নিহত ৯

বিশেষ সম্মাননায় মাইলি সাইরাস

মন ভালো রাখার আহ্বানে পালিত হলো বিশ্ব মেডিটেশন দিবস

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বসলেন তিন বাহিনীর প্রধানরা

ঘরে ফিরে স্বামীকে গলাকাটা অবস্থায় দেখতে পান স্ত্রী

নারীদের লেখা গল্পে আবেগের সত্যতা আলাদা হয়: কৃতিকা কামরা

সীমান্ত সংঘর্ষে কম্বোডিয়ায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ ঘরছাড়া

১০

জবি শিবিরের ওসমান হাদির কবর জিয়ারত

১১

বিপিএলের টিকিট বিক্রি শুরু, কিনবেন যেভাবে

১২

নামাজ পড়ে ফেরার পথে প্রাণ গেল মুসল্লির

১৩

নওগাঁয় বেড়েছে শীতের তীব্রতা

১৪

আরও দীর্ঘ হলো বায়ার্নের ইনজুরির তালিকা

১৫

সড়কে ঝরল দুই প্রাণ

১৬

বাংলাদেশ থেকে ক্রিকেটার নিতে চায় সৌদি আরব

১৭

আজ বছরের দীর্ঘতম রাত

১৮

ছায়ানট ভবনে হামলা-ভাঙচুর : ৩৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

১৯

চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা সেন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

২০
X