ইসলামে অজু শুধু নামাজের প্রস্তুতি নয়, এটা আসলে এক বিরাট নিয়ামত। অজুর পানির ফোঁটা ঝরার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ছোট ছোট গোনাহও ঝরে যায়। (মুসলিম : ২৪৪)
তাই অজুকে বলা হয় পবিত্রতার চাবিকাঠি। আবার হাদিসে আছে, অজু ছাড়া নামাজ হয় না, আর নামাজ হচ্ছে জান্নাতের চাবি। অর্থাৎ, অজু এমন এক ইবাদত যার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর কাছে দাঁড়ানোর যোগ্য হয়ে যায়।
অজুর কথা সামনে আসতেই অনেকে প্রশ্ন করেন, ‘প্রস্রাব করার পর ভালো করে ঢিলা ব্যবহার করা সত্ত্বেও বারবার মনে হতে থাকে, মূত্রফোঁটা বের হয়েছে। নামাজে রুকুতে বা সিজদায় যাওয়ার সময় এমনটা খুব হয়। কিন্তু যাচাই করে কিছুই পাই না। জানার বিষয় হলো, এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী? আর নামাজে প্রস্রাবের ফোঁটা বের হলে কি নামাজ ভেঙে যাবে?’
চলুন, এ প্রসঙ্গে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি জেনে নিই—
উল্লিখিত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে রাজধানীর জামিয়া ইকরার ফাজিল মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ কালবেলাকে বলেন, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কর্তব্য হলো, উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জনের পর সেখানে কিছু পানি ছিটিয়ে দেওয়া। তারপর আর যাচাই করতে না যাওয়া এবং নামাজে দাঁড়িয়ে মূত্রফোঁটা আসল কি না সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নামাজ চালিয়ে যাওয়া। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে এক লোক তার এই সমস্যার কথা জানালে তিনি তাকে এমনটি করতে বলেন এবং তাকে এই আদেশ দেন যে, إِذَا تَوَضّأتَ فَانْضَحْ فَرجَكَ بِالْمَاءِ، فَإِنْ وَجَدْتَ قُلْتَ: هُوَ مِنَ الْمَاءِ.
অর্থাৎ, তুমি অজু করার পর তোমার লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে নেবে। অতঃপর যদি আর্দ্রতা অনুভব হয় তবে সেটাকে তোমার ছিটানো পানির আর্দ্রতা বলে মনে করবে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক : বর্ণনা ৫৮৩)
সুতরাং আপনিও এভাবে পবিত্রতা অর্জন ও নামাজ আদায় করবেন। আর ওয়াসওয়াসা বা সন্দেহকে মোটেও স্থান দেবেন না।
সূত্র : মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক : বর্ণনা ৫৯৫, কিতাবুল আছল : ১/৫৩, খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ১/১৮, আলমুহীতুল বুরহানী : ১/২১৮-২৬৯, বাদায়েউস সানায়ে : ১/১৪০, ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/৯
মন্তব্য করুন