প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি তার পদত্যাগ-পরবর্তী জীবনে সম্ভাব্য একা হয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।
শনিবার (১৭ মে) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, স্বৈরশাসনের সময় আমি প্রায়ই বিরোধী নেতাদের বিষয়ে লিখতাম যারা ওই শাসনবিরোধী ছিলেন এবং যারা জাতির আশার আলো হিসেবে কাজ করছিলেন। তাদের আত্মীয়স্বজনরা প্রায়ই আমার সেই পোস্টগুলো শেয়ার দিতেন। মাঝে মাঝে আমার লেখা এবং সাংবাদিকতার প্রশংসা করে তারা আমাকে বার্তাও পাঠাতেন।
শফিকুল আলম বলেন, এখন আমি যখন অন্তর্বর্তী সরকারের একটি সংবেদনশীল পদে দায়িত্ব পালন করছি। দেখলাম ওই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ আমাকে আনফ্রেন্ড করেছেন। আমি আর আগের আমি নেই। কারও কারও কাছে আমি অহংকারী হয়ে উঠেছি। কারও কাছে ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণু একজন প্রেস কর্মকর্তা।
প্রেস সচিব বলেন, এই মুহূর্তে এসে আমার সাংবাদিকতার পুরো সময়টুকুতে তৈরি হওয়া অনেক ফেসবুক বন্ধুকে হারানোর ভয় জাগছে। আমার কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে ইতোমধ্যে আমার অনেক আত্মীয় সম্পর্ক খারাপ করেছে। আমার স্ত্রী সতর্ক করেছে, এই পদ ছাড়ার পর আমি একা হয়ে যাব।
প্রেস সচিব আরও বলেন, কিন্তু এতে আমার কিছু যায় আসে না। আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে সহিংস কিছু ঘটনা নথিভুক্ত করার সময়ও আমি একা ছিলাম। বিহারিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার সময়, তাদের সঙ্গে হওয়া অন্যায় তুলে ধরার সময়ও আমি একাই ছিলাম। আমার জন্য, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচারের সঙ্গে আমি কাজ করছি কিনা তা নিশ্চিত করা। আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমি কি সঠিকভাবে পালন করছি? এবং দ্বিতীয়ত, আমি কি এটা করতে গিয়ে কারও ক্ষতি করছি?
নিজের জন্য চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়ে শফিকুল আলম লিখেছেন, ক্ষমতা এমনভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত করে যা কেউ কল্পনাও করতে পারে না বা উপলব্ধি করতে পারে না। আব্বাসীয় আমলে সুফিরা সরকারি পদ এড়িয়ে চলতেন। ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো তারা অন্যদের ক্ষতি করবেন না, সেটা নিশ্চিত করা।
সবশেষ তিনি লেখেন, এখন পর্যন্ত, এটাই আমার প্রতিজ্ঞা। আশা করি আমার লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছি ভেবে ভবিষ্যতে গর্ব করতে পারব।
মন্তব্য করুন