স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ মে ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম
আপডেট : ২৬ মে ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্বল্পমেয়াদি লাভের আশায় কি হারিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ?

বাংলাদেশ ‘এ’ দল । ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ ‘এ’ দল । ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে সাম্প্রতিক সিরিজে জয় পেলেও, বাংলাদেশ ‘এ’ দলের কৌশল ও উইকেট ব্যবস্থাপনা ঘিরে উঠেছে গুরুতর প্রশ্ন। তরুণ ক্রিকেটারদের গড়ে তোলার এই সিরিজগুলোতে জয়কে প্রাধান্য দিতে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে শেখার মূল সুযোগ। স্পিনবান্ধব উইকেট, এক পেসার নিয়ে মাঠে নামা, রক্ষণাত্মক দল নির্বাচন—সবকিছুই যেন ইঙ্গিত দেয় : পরিকল্পনার চেয়ে জয়কেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা যতই ক্ষণস্থায়ী হোক না কেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং ও নিউজিল্যান্ড ‘এ’-এর বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিরিজে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে, দল নির্বাচনে ও কন্ডিশন তৈরিতে জয়ের চেয়ে উন্নয়নমূলক চিন্তা গৌণ ছিল। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-১ সমতায় থাকা অবস্থায় সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ বেছে নেয় স্পিন-সহায়ক উইকেট এবং স্পিন নির্ভর বোলিং লাইনআপ। এতে জয় এলেও প্রশ্ন থেকে গেছে—এই জয়ের বিনিময়ে তরুণ পেসারদের শেখার সুযোগ কি শেষ হয়ে গেল? বিশেষ করে যখন এই সিরিজে খেলা অধিকাংশ ক্রিকেটারই ছিলেন বিসিবির হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের সদস্য—তাদের জন্য এমন ম্যাচগুলোই তো হওয়ার কথা ছিল বাস্তব অভিজ্ঞতার ক্লাসরুম।

এমনটা নিয়েই বিশ্লেষণে নামে ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ।

ফলাফলভিত্তিক মানসিকতা বনাম শেখার মঞ্চ

চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার দিনের ম্যাচেও একই প্রবণতা। পেস সহায়ক উইকেট তৈরি না করে স্পিনে ভর দিয়ে ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা চলে। এতে ফলাফল মিলে, কিন্তু উন্নয়নের গতি থমকে যায়।

খালেদ মাহমুদ সুজন, সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক এ নিয়ে স্পষ্ট হতাশা প্রকাশ করেছেন। তার প্রশ্ন, ‘পেস বোলারদের আমরা কীভাবে উদ্বুদ্ধ করব, যদি তাদের উপযুক্ত মঞ্চই না দেই? এত পেসার উঠে আসছে, কিন্তু তাদের কি আমরা খেলাচ্ছি?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ব্যাটাররাও শিখল না কীভাবে মানসম্পন্ন পেস সামলাতে হয়। আবার পেসাররাও বোলিং করল না এমন ব্যাটারদের বিপক্ষে যারা পেসে অভ্যস্ত। তাহলে কি আমরা শিখলাম কিছু?’

সুজনের মতে, আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্পিন উইকেট যৌক্তিক, যেখানে পয়েন্ট বা টেবিলের হিসাব থাকে। কিন্তু এ ধরনের উন্নয়নমূলক সিরিজে জয়ের জন্য স্পিনে ভর করা আত্মঘাতী। ‘আমরা যদি ওয়ানডেতে তিন পেসার নিয়ে খেলতে চাই, তাহলে ‘এ’ দলে এক পেসার রেখে কীসের প্রস্তুতি?’—তিনি প্রশ্ন তোলেন।

চার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আরও রক্ষণাত্মক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রথম ম্যাচে ছয় ব্যাটার ও পাঁচ বোলারে ভারসাম্য রক্ষা করা হলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে সাত ব্যাটার, মাত্র চার বোলার—তার মধ্যে একজন মাত্র পেসার। ম্যাচটি ড্র হলেও, রেখে যায় একটি বড় প্রশ্ন—এই পরিকল্পনা কি ভবিষ্যতের পথে সহায়ক?

বাংলাদেশ ‘এ’ দলের এই জয়গুলো হয়তো পরিসংখ্যানে ভালো দেখাবে, কিন্তু আগামী দিনে যখন জাতীয় দলে পেসার দরকার হবে, তখন কী হবে? শেখার চেয়ে যদি জয়ের চিন্তা বড় হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে ভবিষ্যতের মঞ্চে আমরা প্রস্তুত থাকব তো?

স্বল্পমেয়াদি আনন্দের জন্য দীর্ঘমেয়াদি অগ্রগতি বিসর্জন—এটা কি বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন পরিচয় হয়ে উঠছে? উত্তরটা সময়ই দেবে। কিন্তু সময় থাকতেই প্রশ্ন তোলা জরুরি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মার্কিন ভিসা নিয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের দুঃসংবাদ

নয়াপল্টনে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ দুপুরে

কারামুক্ত হয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এটিএম আজহারুল ইসলাম

ইসরায়েলকে পশ্চিমা এক দেশের কঠোর হুঁশিয়ারি

জুবাইদা রহমানের আপিলের রায় আজ

কারামুক্ত হলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম 

মৌরিতানিয়ায় হজযাত্রীদের নিয়ে বিমান বিধ্বস্ত, যা জানা যাচ্ছে

চিন্তা ও ভাষায় নিয়ন্ত্রিত হবে শাওনের গাড়ি

ঢাকায় পৌঁছেছেন ফাহমিদুল ইসলাম

ঈদুল আজহা কবে জানা যাবে সন্ধ্যায়

১০

সকালে যে আমল করলে সারাদিন ভালো কাটবে

১১

উৎক্ষেপণের ৩০ মিনিটেই বিধ্বস্ত স্টারশিপের রকেট

১২

আজ বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্য দিবস

১৩

আজ যেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া 

১৪

আজকের দিন কেমন কাটতে পারে, জেনে নিন রাশিফলে

১৫

ঢাকার বাতাস সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’

১৬

টানা ৫ দিন বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস

১৭

জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

১৮

টিভিতে আজকের খেলা

১৯

২৮ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

২০
X