ক্রিকেট ইতিহাসে অনন্য কীর্তির মালিক ও ভারতের কিংবদন্তি অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি এবার যুক্ত হলেন আরেকটি মর্যাদাপূর্ণ তালিকায়—আইসিসি হল অব ফেম। ২০২৫ সালের তালিকায় সাবেক ভারত অধিনায়কের নাম ঘোষণা করা হয় লর্ডসে, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে।
ধোনি হচ্ছেন একমাত্র অধিনায়ক যিনি আইসিসির তিনটি প্রধান সাদা বলের ট্রফিই জিতেছেন—২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। তার নেতৃত্বেই ভারত টেস্ট র্যাঙ্কিংয়েও প্রথমবারের মতো শীর্ষে উঠেছিল ২০০৯ সালে।
১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ধোনি খেলেছেন ৩৫০টি ওয়ানডে, যেখানে তার রান ১০,৭৭৩। ৯০টি টেস্টে করেন ৪,৮৭৬ রান, আর ৯৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সংগ্রহ ১,৬১৭ রান। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার রান সংখ্যা ১৫,০০০ ছাড়িয়েছে। উইকেটকিপার হিসেবে ধোনির ঝুলিতে রয়েছে ৮২৯টি ডিসমিসাল—যা তার দক্ষতা ও ধারাবাহিকতার পরিচয় বহন করে।
২০২৫ সালের হল অব ফেমের তালিকায় ধোনির সঙ্গে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথ ও হাশিম আমলা, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন, নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেটোরি, ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার-ব্যাটার সারা টেইলর এবং পাকিস্তানের সাবেক নারী অধিনায়ক সানা মির।
স্মিথ মাত্র ২২ বছর বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্বে আসেন এবং ইতিহাসের প্রথম অধিনায়ক যিনি ১০০ টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেন। আমলা দুই ফরম্যাটেই ছিলেন দুর্দান্ত, ক্যারিয়ারে মোট ৫৬টি শতকসহ অর্জন করেছেন প্রায় ১৭ হাজার আন্তর্জাতিক রান।
হেইডেন ছিলেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের প্রতীক, ১০৩ টেস্টে ৮,৬২৫ রান এবং ৩৮০ রানের এক অনন্য ইনিংসের মালিক। ভেটোরি ছিলেন বামহাতি স্পিনের নিখুঁত শিল্পী, ৬০০’র বেশি আন্তর্জাতিক উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও অবদান রেখেছেন নিয়মিত।
নারী ক্রিকেটে অবদান রাখা দুজন হলেন সারা টেইলর ও সানা মির। উইকেটকিপার হিসেবে টেইলরের নাম উচ্চারিত হয় সেরাদের কাতারে। আর সানা মির ছিলেন পাকিস্তান নারী ক্রিকেটের অগ্রদূত, যিনি প্রথমবার আইসিসি হল অব ফেমে জায়গা করে নিয়েছেন দেশটির পক্ষ থেকে।
এমএস ধোনির এই স্বীকৃতি শুধু তার কীর্তিকেই স্মরণ করায় না, বরং এটি প্রমাণ করে—নেতৃত্ব, নিষ্ঠা ও পারফরম্যান্স মিলে একজন ক্রিকেটারের মর্যাদা কতটা উঁচুতে উঠতে পারে।
মন্তব্য করুন