গল টেস্টের শেষে মাঠের লাইট বন্ধ হয়ে গেলেও আলো ছড়িয়ে গেল বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠ থেকে। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, অধিনায়কত্বে সাহসিকতা—তার ওপর ছিল অনেক প্রশংসা। তবে সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ক বার্তাটি এলো ম্যাচ শেষে লঙ্কান অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের রিটায়ারমেন্ট প্রসঙ্গে।
নিজের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলা ম্যাথুজকে করতালি দিয়ে বিদায় জানায় বাংলাদেশ দল। সেটি ছিল ক্রিকেটীয় সৌহার্দ্য আর সম্মানের একটি নিখুঁত প্রতিচ্ছবি। শান্ত নিজেও ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আবেগ ছুঁয়ে যাওয়া কণ্ঠে বললেন, ‘আমি মনে করি, ম্যাথুজ যেভাবে ক্যারিয়ারটা শেষ করেছেন, ব্রিলিয়ান্ট। তার কন্ট্রিবিউশন দেশের জন্য অনেক বেশি। ১০০ টেস্টের ওপর খেলা—এটা অনেক বড় ব্যাপার।’
তবে শান্তর দৃষ্টি শুধু একজন প্রতিপক্ষ গ্রেটের প্রশংসায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। তিনি আলো ফেলেছেন বাংলাদেশ দলের অভ্যন্তরের দিকেও—যেখানে সংস্কৃতি গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে। তার মতে, ‘অনেক ইয়াং ক্রিকেটাররা তাকে দেখে শিখবে বা তাদের ইচ্ছা জাগবে যে আমিও ১০০ টেস্ট খেলব।’
অধিনায়ক শান্ত অবশ্য অবসরের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে ব্যক্তিস্বাধীনতার পক্ষে। প্রথম দিনই সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, এটি যার যার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সেই বক্তব্য আবারও তুলে ধরেন, ‘অনেকে ইচ্ছা করে মাঠ থেকেই বিদায় নিতে, কেউ আবার সেটা চায় না। এটা একদমই ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপার।’
তবে তিনি মনে করেন, যদি কেউ মাঠ থেকে বিদায় নিতে চায়, তবে তাকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দেওয়ার সংস্কৃতি তৈরি হওয়া উচিত। তার ভাষায়, ‘যদি সম্মানের সঙ্গে বিদায় দেওয়া যায়, তাহলে একটা সুন্দর কালচার তৈরি হয়। আমার মনে হয়, এ ধরনের কালচার তৈরি করাটা খুবই ইম্পরট্যান্ট।’
বাংলাদেশে বহুবারই দেখা গেছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের অবসর ঘিরে অস্বচ্ছতা, বিতর্ক, এমনকি বিব্রতকর পরিস্থিতি। কারও অবসর আসতে চাইলেও বোর্ডের দ্বিধা, আবার কেউ অবসর চাইলে পাবেন কি না সম্মান—সেটাও থাকে প্রশ্নের মধ্যে। শান্ত সেই জায়গা থেকেই যেন আলোর রেখা দেখান, যেখানে খেলোয়াড়দের ইচ্ছা, অবদানের মূল্যায়ন এবং ক্রিকেট সংস্কৃতির মানোন্নয়ন একসূত্রে বাঁধা।
তার ভাষ্য, ‘আমি আশা করব, সামনে যদি এরকম রিটায়ারমেন্ট আসে, প্রাপ্য সম্মান যেন সবাই পায়—যদি কেউ মাঠ থেকে বিদায় নিতে চায়।’
মন্তব্য করুন