টেস্ট দলে জায়গা হলেও ওয়ানডে দলে সুযোগ মেলেনি এনামুল হক বিজয়ের। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) দাপুটে পারফরম্যান্স করেও নির্বাচক প্যানেলের আস্থা অর্জন করতে পারেননি তিনি। তবে আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন। দুই বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন তিনি। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে সুযোগ না মিললেও শ্রীলঙ্কা সফরের ওয়ানডে দলে আছেন লিটন দাসও। তবে বাদ পড়েছেন আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার। কে কীভাবে দলে এসেছেন, কার কোন পারফরম্যান্সকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে—এসবের ব্যাখ্যা দিয়েছে বিসিবির নির্বাচক প্যানেল। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ও সহকারী নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক বিজয়ের সুযোগ না পাওয়া ও নাঈমের ফেরার বিষয়ে বলেছেন, কেউই সিস্টেমের বাইরে নেই।
ডিপিএলের সর্বশেষ আসরে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছিলেন বিজয়। ১৪ ম্যাচে চার সেঞ্চুরিতে তোলেন ৮৭৪ রান। লিগের মাঝপথে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট দলে ডাক পাওয়ায় বাকি অংশ আর খেলা হয়নি তার। টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার কারণ ছিল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার পারফরম্যান্স; কিন্তু ওয়ানডে দলে সুযোগ হয়নি তার। টেস্ট দলে ডাক পেয়েও আস্থা রাখতে পারছেন না তিনি। তবে কি ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স জাতীয় দলে কোনো কাজেই আসে না!
বিজয়ের ব্যর্থতায় কিছুটা হতাশ নির্বাচক প্যানেলও। সহকারী নির্বাচক রাজ্জাকের কণ্ঠেই তা প্রকাশ মিলেছে, ‘এটা তো হতাশাজনকই। আমরা যাকেই নেই, সততার সঙ্গে নেওয়া হয়। দলের সুবিধা হবে, সেটা চিন্তা করে নেওয়া হয়। এটাও খুবই স্বাভাবিক নিয়ম যে সবাই সব জায়গায় ভালো খেলবে না। হয়তো বিজয়ের (এনামুল) ও রকম একটা মিস হয়েছে আর কী।’
তবে ব্যর্থ হলেও সিস্টেমের বাইরে যাচ্ছেন না এই ওপেনার। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিজয় যদি ব্যর্থ হন, তাহলেও তাকে সিস্টেমে রাখব, জাকির (হাসান), (মাহমুদুল হাসান) জয় সবাই সিস্টেমের মধ্যে থাকবে। ব্যর্থ হওয়া ক্রিকেটেরই অংশ। কিন্তু সেখান থেকে সাহায্য করার চেষ্টা করা যে কীভাবে তারা সফল হতে পারেন, এখানে খেলোয়াড়দেরও নিবেদন থাকতে হবে। তিনি (খেলোয়াড়) হচ্ছেন মুখ্য মানুষ, যে তার ভুলত্রুটিগুলো শোধরাতে পারেন।’
জাতীয় দলে বেশ কয়েকবার সুযোগ পাওয়া নাঈম সম্প্রতি ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১১ ম্যাচ খেলে ৬১৮ রান করেছিলেন। যা এবারের আসরে তৃতীয় সর্বোচ্চ। নাঈমকে জায়গা দেওয়া হয়েছে সৌম্য সরকারকে বাদ দিয়ে। প্রধান নির্বাচক বলেছেন স্ট্রাইকরেটের জন্যই নাঈমের দলে অন্তর্ভুক্তি, ‘দলের মধ্যে যেটা চাচ্ছি, ভালো স্ট্রাইক রেটের জন্য ভালো ইনটেনসিটিতে ব্যাটিং করা। সেখানে একে-অন্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করছেন তানজিদ ও পারভেজ। নাঈম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনো হয়তো খেলতে পারেননি। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে তাকে জানানো হয়েছিল (ভালো স্ট্রাইকরেটের কথা)। সেই আলোকে তিনি যথেষ্ট অনুশীলন করেছেন, প্রস্তুতি নিয়েছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি তিনি খুব ভালো স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করছেন।’
ছন্দে না থাকায় বাদ পড়া লিটনের দলে ফেরার পেছনে কাজ করেছে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বের সাহস জোগানো! প্রধান নির্বাচকের ভাষ্যই সেটা বলে, ‘কারও যদি ফর্মে ফিরতে হয়, তাহলে তার জন্য মাঠে যত বেশি সম্ভব সময় কাটানোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মনে করি লিটন তার ওয়ানডের ফর্ম টি-টোয়েন্টিতেও বয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।’
মন্তব্য করুন