শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার যে দৃশ্যটা ধরা পড়ল, সেটা হয়তো নেপালি ক্রিকেট ভক্তদের স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে গেল। বিশ্বকাপজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো পূর্ণ সদস্য আইসিসি দলের বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে নিল নেপাল। ১৯ রানের এই জয় শুধু পরিসংখ্যান বদলালো না, বরং এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল পাহাড়ি দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসে।
অবশ্য টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একেবারেই হতাশাজনক ছিল নেপালের। ৪ ওভারেই দুই ওপেনার কুশল ভুর্তেল (৬) আর আসিফ শেখ (৩) ফিরে গেলে স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ১২ রান। তবে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক রোহিত পাওডেল আর কুশল মল্লা। দুই সিনিয়রের জুটিতে আসে ৫৮ রান, যা দলের ভিত গড়ে দেয়। ৩৮ বলে ৩৮ রান করেন পাওডেল—যেখানে ছিল তিনটি চার আর একটি ছক্কা। মল্লা ২১ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংসে মারেন দুটি চার ও দুটি ছক্কা।
শেষ দিকে গুলশন ঝা (২২) আর দিপেন্দ্র সিংহ আইরি (১৭) যোগ করলে নেপালের স্কোর দাঁড়ায় ২০ ওভারে ১৪৮/৮। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার বল হাতে ছিলেন দুর্দান্ত—৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে নিলেন চারটি উইকেট।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ক্যারিবীয়রা কোনো সময়েই নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। নেপালের শৃঙ্খলিত বোলিংয়ের সামনে ২০ ওভার শেষে থামতে হয় ১২৯/৯ রানে। নবাগত নাভিন বিদাইসি সর্বোচ্চ ২২ রান করলেও বাকিদের ব্যাট নড়েচড়ে উঠেনি। কুশল ভুর্তেল নেপালের হয়ে নিয়েছেন দুটি উইকেট, পাশাপাশি ললিত রাজবংশী, নন্দন যাদব, করণ কেসি, আইরি ও অধিনায়ক পাওডেল প্রত্যেকে পেয়েছেন একটি করে উইকেট।
সবমিলিয়ে ব্যাটে-বলে নেতৃত্বে ছিলেন রোহিত পাওডেল। ৩৮ রানের ইনিংস আর এক উইকেটের সুবাদে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন এই তরুণ অধিনায়ক।
শারজাহর রাত তাই সাক্ষী থাকল নেপালের ক্রিকেট-গাথার নতুন সূচনার—যেখানে এক ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক পুরো দল, আর প্রতীক হয়ে থাকলেন রোহিত পাওডেল।
মন্তব্য করুন