

ক্রিকেট মাঠে একসময় ছিলেন জাদুকর— নরম কব্জির মুঠোয় বলকে পাঠাতেন সীমারেখার বাইরে। সেই মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন এবার জীবনের একদম নতুন ইনিংস শুরু করলেন— রাজনীতির ব্যাট হাতে। ভারতের তেলঙ্গানা রাজ্যের মন্ত্রিসভায় শপথ নিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক, যিনি একসময় দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে মার্জিত ব্যাটারদের একজন ছিলেন।
শুক্রবার রাজভবনে রাজ্যপাল জিষ্ণু দেব ভার্মার উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী রেবান্ত রেড্ডির নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার নতুন সদস্য হিসেবে শপথ নেন আজহার। কংগ্রেস নেতৃত্বের বিশেষ সিদ্ধান্তেই তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভায়, যেখানে তিনি হলেন প্রথম মুসলিম প্রতিনিধি—তেলঙ্গানার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক প্রতীকী মুহূর্ত।
আজহারের এই যোগদানের মধ্য দিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬-তে। রাজ্যের বিধানসভা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৮ মন্ত্রী রাখার অনুমতি রয়েছে তেলঙ্গানা সরকারের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আজহারউদ্দিনকে সামনে রেখেই জুবলি হিলস উপনির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেস। ওই আসনে প্রায় এক লাখ মুসলিম ভোটার রয়েছেন, যাদের প্রভাব ফলাফলে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। গত জুনে বিআরএস বিধায়ক মগান্তি গোপিনাথের মৃত্যুর পর থেকেই আসনটি শূন্য ছিল।
 
                                                                        
একসময় ভারতের ক্রিকেটের সবচেয়ে স্টাইলিশ অধিনায়ক ছিলেন আজহারউদ্দিন— ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতীয় দলকে। তার নেতৃত্বে ভারত জিতেছে অসংখ্য হোম সিরিজ, পেয়েছে আত্মবিশ্বাসের নতুন সংজ্ঞা। ক্রিকেট থেকে অবসরের পর রাজনীতিতে আসেন কংগ্রেসের হাত ধরে, নির্বাচিত হয়েছিলেন মোরাদাবাদ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবেও।
এবারের এই পদোন্নতিতে আজহারউদ্দিনের জীবনে যেন খুলে গেল নতুন অধ্যায়— ক্রিকেট মাঠের পর এবার প্রশাসনের পিচে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ তার সামনে।
আজহার একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি যখন মাঠে নামতাম, আমার দায়িত্ব ছিল দেশের সম্মান রক্ষা করা। রাজনীতিতেও আমার লক্ষ্য ঠিক সেটাই— মানুষের আস্থা ধরে রাখা।”
তার সেই কথার মতোই, আজ হয়তো আবার একবার ‘ইনিংস ওপেন’ করতে যাচ্ছেন— শুধু জায়গাটা বদলে গেছে, কিন্তু খেলার নাম এখনো একই—দেশের জন্য লড়াই।
মন্তব্য করুন