

ছয় বছর আগে সেই ব্যথাটা রয়ে গিয়েছিল। ইমার্জিং এশিয়া কাপের শিরোপা হাতে ছুঁয়েও না পাওয়া বাংলাদেশ ফিরে এসেছিল মাথা নিচু করে। ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ৭৭ রানের হারে তরুণ শান্ত-আফিফদের চোখের সামনে ভেঙেছিল স্বপ্ন। ২০২৫ সালে এসে ইতিহাস আবার দুই দলের সামনে দাঁড়িয়েছে—এবার নাম বদলে রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপ, মঞ্চ কাতারের দোহা, আর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সামনে।
রোববার টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে আকবর আলীর দল। পাকিস্তান শাহিনসকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ফাইনাল শুরু করল বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে নামার আগেই ম্যাচ পেয়েছে প্রতীক্ষার রসদ—একদিকে অতীতের ক্ষত, অন্যদিকে ইতিহাস গড়ার হাতছানি।
পাকিস্তানের অধিনায়ক মাজ সাদাকাত টুর্নামেন্টজুড়ে ছিলেন প্রায় অপ্রতিরোধ্য। চার ম্যাচে ২৩৫ রান, গড় ২৩৫—এমন পরিসংখ্যানই বলে দেয় তার ধারাবাহিকতা কতটা ভয়ংকর। তিন ইনিংসে অপরাজিত থাকা বাঁহাতি ওপেনার গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৭৯ রানের চমৎকার ইনিংস। আজ টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হতে তার দরকার মাত্র ৫ রান। বড় ম্যাচে নিজেকে তুলে ধরার অভিজ্ঞতাও আছে তার ঝুলিতে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের শক্তির কেন্দ্রবিন্দু রিপন মণ্ডল। ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে সুপার ওভারে কোনো রান না দিয়ে দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে এনে যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন, তা টুর্নামেন্টেরই অন্যতম সেরা মুহূর্ত। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৮ উইকেট নিয়ে আছেন লিডিং উইকেটশিকারির তালিকার শীর্ষে। ফাইনালেও তার উপরই বড় আশা।
ব্যাট হাতে বিস্ফোরক ভূমিকা রাখছেন হাবিবুর রহমান সোহান। হংকংয়ের বিপক্ষে মাত্র ৩৫ বলে সেঞ্চুরি, সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ৬৫—পুরো টুর্নামেন্টে রান এসেছে ২০২, যা তাকে রানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রেখেছে। ফাইনালে তার ব্যাটই এনে দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত শুরুর ছন্দ।
বাংলাদেশের সামনে আজ শুধু একটি ম্যাচ নয়—একটি যুগের অপেক্ষার গল্প। ২০১৯ সালে হাত ছাড়া হওয়া শিরোপা ফিরে পাওয়ার সাথে সাথে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইতিহাসও পাল্টানোর সুযোগ। দোহায় তাই শুরু হয়েছে নতুন লড়াই—অতীতের ক্ষত মুছে ভবিষ্যতের স্বপ্ন লেখার লড়াই।
মন্তব্য করুন