

লন্ডনের একপাশ লাল, অন্যপাশ নীল—নর্থ লন্ডন ডার্বির দিন সবসময়ই আবেগে উঁচু থাকে। তবে এমিরেটসে এবার আবেগের জায়গা দখল করে নিল নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ, নির্ভুল পাসিং আর এক ফুটবলারের নাম—এবেরেচি এজে। যে ফুটবলারকে গ্রীষ্মে প্রায় সই করিয়ে ফেলেছিল টটেনহ্যাম, সেই তিনিই কাল রাতে দলটিকে অসহায় করে তুললেন নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিকে। ফল—আর্সেনালের একতরফা জয়, আর প্রিমিয়ার লিগের টেবিল শীর্ষে ছয় পয়েন্টে ব্যবধান।
টটেনহ্যাম কোচ থমাস ফ্র্যাঙ্ক এমিরেটসে পাঁচ ডিফেন্ডারের রক্ষণ সাজিয়ে শুরু থেকেই চেয়েছিলেন ব্যবধানটা ন্যূনতম রাখতে। কিন্তু লিগের সেরা ফর্মে থাকা আর্সেনালের সামনে তাতেও কোনো লাভ হলো না। দাপটের সঙ্গে খেলতে থাকা আর্সেনাল ৩৬তম মিনিটে এগিয়ে যায় লিয়ান্দ্রো ট্রোসার্ডের গোলে—মিকেল মেরিনোর চমৎকার থ্রু বল ধরে নিখুঁত ফিনিশ।
বিরতির আগেই আর্সেনালের লিড দ্বিগুণ করেন ম্যাচের নায়ক এজে। বক্সের ডান প্রান্তে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে নিচু শটে পরাস্ত করেন গুগলিয়েলমো ভিকারিওকে। গ্রীষ্মে যাকে প্রায় টেনে এনেছিল স্পার্স, সেই এজের গোলের সামনে দাঁড়িয়েই যেন জমে উঠেছিল ডার্বির নাটক।
বিরতি থেকে ফিরেই টটেনহ্যাম রক্ষণ বদলে আক্রমণ বাড়ানোর চেষ্টা করে। তবে মাত্র ৩৫ সেকেন্ডের মধ্যেই গড়ে যায় ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত—এজের বাঁ পায়ের দারুণ কার্লিং শটে ৩-০ তে পাল্লা ভারী আর্সেনালের।
অবশ্য ম্যাচে হাল ছেড়ে দেয়নি স্পার্স। ডেভিড রায়াকে প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে চমকে দিয়ে গোল করেন রিচার্লিসন। কিন্তু তাতেও ব্যবধান কমেনি খুব বেশি। ৭৬তম মিনিটে আবারও সামনে আসেন এজে—এবার লক্ষ্যভেদ করে পূরণ করেন নিজের প্রথম প্রিমিয়ার লিগ হ্যাটট্রিক।
এজের এই পারফরম্যান্স শুধু ডার্বির রংই বদলায়নি, বদলে দিয়েছে লিগ টেবিলের গতি-প্রকৃতিও। ২০২৫ মৌসুমে এখন পর্যন্ত কোনো ইংলিশ খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি গোল–অবদান নেই তার। মাত্র ১৫ ম্যাচে পাঁচ গোল ও তিন অ্যাসিস্ট—আর্তেতার পরিকল্পনায় কিভাবে নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন, সেটাই আরেকবার স্পষ্ট হলো।
২০০৪ সালের পর প্রথম লিগ শিরোপার স্বপ্ন কি এবার সত্যিই হাতের নাগালে? তিন মৌসুম ধরে রানার-আপ হিসেবে শেষ করা আর্সেনাল এবার ছয় পয়েন্টে এগিয়ে। আর ফর্মের এমন ধারাবাহিকতা থাকলে—বিশেষ করে এজের মতো ম্যাচ–বদলে দেওয়া ফুটবলার দলে থাকলে—তাদের থামাতে পারবেনই বা কে?
মন্তব্য করুন