টানা ব্যর্থতার পরও সৌম্য সরকারের ওপর অগাধ আস্থা ছিল টিম ম্যানেজম্যান্টের। নিউজিল্যান্ড সফরের প্রথম ওয়ানডেতে বিভীষিকাময় প্রত্যাবর্তন হয় বাঁ-হাতি এ ব্যাটারের।
শূন্য রানে আউট হওয়ার পরও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টিকে যান একাদশে। সর্বশেষ দুই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়া, বাঁ-হাতি ওপেনার এবার উপহার দিলের স্বপ্নময় এক ইনিংস। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে দিলেন আস্থার প্রতিদান। নাম লেখালেন রেকর্ড বুকে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে উল্লেখ্য করার মতো কোনো পারফরম্যান্স ছাড়াই সৌম্য ডাক পান নিউজিল্যান্ড সফরে। প্রথম ওয়ানডের আগে অধিনায়ক জানিয়ে ছিলেন ইনজুরি আক্রান্ত সাকিব আল হাসানের অভাব সৌম্যকে দিয়ে পূরণ করতে চান তারা। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে প্রায় একই কথাই জানান দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
ডানেডিনের ম্যাচে পুরোপুরি ব্যর্থ সৌম্য। খরুচে বোলিংয়ে ৬ ওভারে ৬৩ রান। তার ক্যাচ মিসের বড় মাশুল দিতে হয় দলকে। ব্যাট করতে নেমে আউটন হন প্রথম ওভারেই শূন্য রানে। এর আগেও তার ব্যাটে ছিল না রান। সবশেষ ৬ ওয়ানডেতে দুই অঙ্কে কোটা ছুঁতে পেরেছিলেন কেবল একবার। তিন ম্যাচে সাজঘরে ফেরেন শূন্য রানে।
তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে দারুণভাবে দলের চাওয়া কিছুটা পূরণ করেছেন তিনি। ১৫১ বলে দুই ছক্কা ও ২২ চারে খেলেছেন ১৬৯ রানের ইনিংস। এদিন ভাগ্যও ছিল তার পাশে। তিনবার ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান তিনি। তার সৌজন্যেই ২৯১ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
অপর প্রান্তের ব্যাটাররা যখন ক্রিজে আসা-যাওয়ার মিছিলে তখন এক প্রান্তে অবিচল ছিলেন সৌম্য। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৫৮ বলে করেন অর্ধশতক। ঠিক একই গতিতে ব্যাট চালিয়ে ১১৬ বলে পেয়ে যান তিন অঙ্কের দেখা। করেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক। ৫ বছরের মধ্যে যা প্রথম। এরপর মনোযোগী হন রানের গতি বাড়ানোয়। উইকেটের চারপাশে নান্দনিক শট খেলে ১৪৪ বলে করেন ক্যারিয়ারের প্রথম দেড়শ।
ছাড়িয়ে যান ২০১৫ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা আগের সেরা অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংসকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছিল মাহমুদউল্লাহর। ২০১৫ বিশ্বকাপে হ্যামিল্টনে অপরাজিত ১২৮ রানের দারুণ ইনিংস তিনি। সেটাও ছাড়িয়ে যান সৌম্য।
নিউজিল্যান্ডে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটার তিনি। বাঁ-হাতি এই ওপেনারের সামনে হাতছানি ছিল দারুণ এক রেকর্ডের। কিন্তু এর আগেই থেমে যেতে হয় তাকে। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লিটন দাসের ১৭৬ রানের ইনিংসটি এখনও বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান। সম্ভাবনা জাগিয়ে থামেন সৌম্য।
তবে ঠিকই আরেকটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের ইনিংসের সবচেয়ে বেশি শতাংশ রান তার ব্যাট থেকে এসেছে। ৫৮.০৭ শতাংশ রান করে পেছনে ফেলেছেন মুশফিকুর রহিমকে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এশিয়ান ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ স্কোর, সৌম্যকে এগিয়ে রাখবে অনেকটা।
মন্তব্য করুন