চট্টগ্রামের সাগরিকায় বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজের বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৩ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান করে বাংলাদেশ। ম্যাচের অনেকাংশ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় আফগানদের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ১৬৪ রানে, ওভার ৪৩। ১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে আফগানরা।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের অবস্থা ছিল হতাশাজনক। একমাত্র তাওহিদ হৃদয় ছাড়া ব্যর্থ বাকি সবাই। সর্বোচ্চ জুটিই এসেছে ৩৭ রানের, সাকিব-তাওহীদ। হৃদয় করেছেন ৫১ রান, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ রান এসেছে লিটন দাসের ব্যাট থেকে।
অবশ্য বাংলাদেশকে কম রানে বেধে ফেললেও শেষে এসে একটু অস্বস্তি থাকবে আফগান শিবিরে। শেষ ওভার করতে এসে ওভার সম্পন্ন না করেই উঠে যান ফজলহক ফারুকি, এ পেসার নেন ৩ উইকেট। দুই স্পিনার মুজিব ও রশিদ নেন ২টি করে উইকেট। ১টি করে নেন ওমরজাই ও নবী।
চট্টগ্রামের শহীদ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বৃস্টির শঙ্কা নিয়ে এদিন খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদী। কোমরের চোট থাকায় তামিমের খেলা নিয়ে কিছুটা দোলাচল থাকলেও তিনিই টাইগারদের প্রতিনিধি হয়ে নেমেছিলেন। এরপর সাবধানী মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ও লিটন দাস।
শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ছিলেন তামিম ইকবাল। বেশিক্ষণ থিতু হতেও পারলেন না উইকেটে। ফজল হক ফারুকীর বলে ২১ বলে ১৩ করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন টাইগার অধিনায়ক।
তামিমের বিদায়ের পর ক্রিজে এসেই নাজমুল হোসেন শান্ত দারুণ শট খেলতে শুরু করেন। হাত খুলে খেলতে থাকেন লিটন দাসও। কিন্তু মুজিব উর রহমানের বলে পুল শট খেলতে গিয়ে লিটন ধরা পড়েন ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে। ৩৫ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ২৬ রান করেন তিনি।
এর পরের ওভারে শান্তও বিদায় নেন। মোহাম্মদ নবীর প্রথম বলেই শান্ত স্লগ সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ধরা পড়েন মোহাম্মদ সালেমের হাতে। তাতে ১৬ বলে ১২ রান করেই থামতে হয় ইনফর্ম শান্তকে। এরপরই চোখ রাঙিয়ে চট্টগ্রামের সাগরিকায় নামে মুষলধারে বৃষ্টি। যার কারণে আধাঘণ্টারও বেশি সময় খেলা বন্ধ ছিল।
বৃষ্টি শেষে টাইগারদের পথ দেখাতে থাকা সাকিব আল হাসানও চাপে ভেঙে পড়েন। রানের গতি বাড়াতে গিয়েই আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে অফ-সাইডে শট খেলতে গিয়ে মোহাম্মদ নবির তালুবন্দী হন তিনি। এতে হৃদয়ের সঙ্গে জুটি বড় করার স্বপ্ন শেষ হয়। সাকিব ৩৪ বলে ১৪ রান করেছেন। তার পরপরই আউট হয়ে যান মুশফিকুর রহিম। রশিদ খানের গুগলিতে তিনি ৩ বলে ১ রান করেই বোল্ড হয়ে ফিরে যান।
এরপর একে একে ফিরেছেন আফিফ হোসেন এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। মাঝে মূল স্কোয়াডের বাইরে থাকা আফিফ এই সিরিজ দিয়ে ফের দলে ফিরেছিলেন। কিন্তু তিনিও তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গ দিতে পারেননি। রশিদের লেগ স্পিন ব্যাকফুটে খেলতে গিয়েছিলেন আফিফ, তবে মিস করে যান। প্রথমে আম্পায়ার সাড়া না দিলেও আফগানিস্তানের রিভিউ কাজে লেগে যায়। মাত্র ৪ রানে ফেরেন আফিফ। ২৩ বলের সংগ্রাম শেষে ৫ রানে মিরাজ ফারুকির বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন।
এরপর আরও এক দফা বৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধ থাকে। সে সময় পর্যন্ত একপ্রান্ত তরুণ তাওহীদ হৃদয় আগলে রাখলেও, অন্যপ্রান্তে তিনি সতীর্থদের আসা-যাওয়া দেখেছেন। দলের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তার ব্যাটে চড়েই মূলত দেড়শ’র কোঠা পেরিয়েছে টাইগাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১৬৯/৯ ( মোস্তাফিজুর ৩*, হাসান ৮*; হৃদয় ৫১, তাসকিন ৭, মিরাজ ৫, আফিফ ৪, মুশফিক ১, সাকিব ১৫, শান্ত ১২, লিটন ২৬, তামিম ১৩)
মন্তব্য করুন