হঠাৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম ইকবাল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ যেতেই বৃহস্পতিবার (০৬ জুলাই) দুপুরে এমন ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তামিম জানিয়েছেন, হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নয়, কয়েকদিন ধরে ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
যদিও একটি সূত্রে জানা গেছে, তামিমের অবসরের পেছনে মূল কারণ বিসিবি ও টিম ম্যানেজমেন্ট। দুমুখী চাপে পড়েই এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
১৬ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ তামিম। দলের অন্যতম সেরা ওপেনারও তিনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চোট ও ফিটনেস নিয়ে ভালোই ভুগতে হচ্ছিল বাঁহাতি এই ওপেনারকে। বিভিন্ন সিরিজের আগে ছিটকে যাওয়া কিংবা পারফরম্যান্স তলানিতে পৌঁছানো মিলিয়ে সময়টা ভালো যাচ্ছিল না তার।
চোট থাকার পরও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কোচ ও বিসিবি সভাপতির অসন্তোষের কারণও হন তিনি। এসব নিতে না পেরেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম।
তামিমের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন ধরেই বোর্ড ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সময়টা ভালো যাচ্ছিল না তামিমের। বোর্ডের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে মানসিকভাবে চাপে পড়েন তিনি। সেসব নিতে না পেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। যদিও তামিম সে রকম কোনো কিছু তার সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করেননি। তবে তার কান্নাভেজা চোখে স্পষ্ট সিদ্ধান্তটা এতটাও সহজ ছিল না।
এর আগে দুপুর দেড়টায় চট্টগ্রামের একটি হোটেলে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম। বলেন, ‘গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমার শেষ ম্যাচ ছিল। আমি এখন অবসরের ঘোষণা দিলাম।’
নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ১৬ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের জন্য তামিম সতীর্থ, কোচ, বিসিবি, পরিবার ও সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ক্যারিয়ারের এই দীর্ঘ পথচলায় আমার সব সতীর্থ, সব কোচ, বিসিবির কর্মকর্তারা, আমার পরিবার ও যারা আমার পাশে ছিলেন, নানাভাবে সহায়তা করেছেন, ভরসা রেখেছেন এবং আমার ভক্ত-সমর্থক, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনুসারী, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের সবার অবদান ও ভালোবাসায় আমি চেষ্টা করেছি সব সময় দেশের জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে।’
তামিম অবসর পরবর্তী জীবনের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জীবনের নতুন অধ্যায়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। সবাইকে আবারও ধন্যবাদ।’
বিশ্বকাপের বাকি আর মাত্র তিন মাস। তার আগেই তামিমের এমন সিদ্ধান্ত দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে নতুন মোড় দিয়েছে বলা যায়। এখন ক্রিকেট বোর্ডকে নতুন করে অধিনায়ক খুঁজতে হবে। আপাতত এ সিরিজে নেতৃত্ব দেবেন লিটন দাস।
অধিনায়ক হিসেবে তামিমের সাফল্য চোখে পড়ার মতোই। ৩৭ ম্যাচের ২১টিতে জিতেছেন তিনি। ১৪ ম্যাচে হার ও দুই ম্যাচ পরিত্যক্ত মিলিয়ে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে এটি তার সাফল্য হিসেবে দেখা হবে।
মন্তব্য করুন