বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের মধ্যে হঠাৎ করে অবসরের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) চট্টগ্রামে একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেকে অবসরের ঘোষণা দেন ওয়ানডে অধিনায়ক।
এমন ঘোষণার পর বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। চলছিল আলোচনা-সমালোচনাও। এ অবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একদিন পরই সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন জাতীয় দলের এ ওপেনার। তামিম জানিয়েছিলেন, হুটহাট করেই তিনি সিদ্ধান্ত নেননি। অনেক চিন্তাভাবনা করেই জাতীয় দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তামিমকে ফেরানোর জরুরি মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নিলেও বিসিবির কোনো প্রস্তাবে সাড়া দেননি দেশসেরা ওপেনার। শেষমেশ এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার (৭ জুলাই) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার মাধ্যমে তামিমকে গণভবনে ডেকে নিয়ে তার সঙ্গে তিন ঘণ্টা আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা ও আলোচনার সেই অভিজ্ঞতা পরে নিজেই শুনিয়েছেন তামিম।
এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তামিমের অনেকবার দেখা ও কথা হয়েছে। তবে তামিম বলছেন, এবারের সাক্ষাৎকার অন্যরকম ছিল। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা তাকে মুগ্ধ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি নিজেই। এবারের সাক্ষাৎকারে সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী আয়েশা। নিজের স্ত্রীকে খেলা দেখতে মাঠে নিয়ে যান না বলে তামিমকে বকেছেন প্রধানমন্ত্রী। তামিম বলেন, আয়েশাকে মাঠে নিয়ে যাই না, খেলা দেখতে নিয়ে যাই না বলে প্রধানমন্ত্রী আমাকে বকাও দিলেন বেশ! পরে আয়েশাকে তার (প্রধানমন্ত্রী) ফোন নম্বর দিয়ে বললেন, এরপর যদি তামিমের মাথায় কোনো উল্টাপাল্টা ভাবনা আসে, তুমি সরাসরি আমাকে মেসেজ দেবে আর ওকে নিয়ে আসবে আমার কাছে।
তামিম জানান, কক্ষে পা দেওয়ামাত্র প্রধানমন্ত্রী তাকে বলেন, ‘কি তামিম, কী সব পাগলামি নাকি করছো! এসব করলে তো চলবে না। সবকিছু মাথা থেকে সরিয়ে ফেলো।’ তামিম আরও বলেন, তিনি সবসময় এত আন্তরিকতা নিয়ে কথা বলেন, কোনো জবাব থাকে না। আমি শুধু হাসলাম। তারপর কথা চলল দীর্ঘক্ষণ। শুরুতে মাশরাফী ভাইয়ের সামনে আমার সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। পরে আলাদা করে কথা বলেছেন, সেখানে আমি আর আয়েশা (স্ত্রী) ছিলাম শুধু। পাপন ভাই আসার পরও একসঙ্গে সবার কথা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী ২ ঘণ্টার বেশি সময় মনে হয় আলাদা করেই কথা বলেছেন আমার সঙ্গে। আমার জীবনের এটি অনেক বড় স্মরণীয় একটি ঘটনা।
মন্তব্য করুন