ক্লাব বিশ্বকাপে পিএসজির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে গুরুতর চোটে মাঠ ছাড়তে হয় বায়ার্ন মিউনিখের তরুণ মিডফিল্ডার জামাল মুসিয়ালাকে। দোন্নারুম্মার সঙ্গে প্রথমার্ধের শেষদিকে সংঘর্ষে তার বাঁ পায়ের হাড় ভেঙে যায় এবং গোড়ালি স্থানচ্যুত হয়ে যায়। তবে এত বড় দুর্ঘটনার পরও এই ২২ বছর বয়সী তরুণ দোষ চাপাননি কাউকে, বরং বললেন— ‘এমনটা হতেই পারে।’
ম্যাচের প্রথমার্ধের অন্তিম মুহূর্তে বল দখলের চেষ্টায় দোন্নারুম্মার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় মুসিয়ালার। সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি, মাঠে ঢোকে মেডিকেল টিম। পরে স্ট্রেচারে করে বের করে নেওয়া হয় তাকে।
পরে জানা যায়—তার বাঁ পায়ের ফিবুলা হাড় ভেঙে গেছে এবং গোড়ালি স্থানচ্যুত হয়েছে। দ্রুত অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা থেকে জার্মানির মিউনিখে ফিরিয়ে আনা হয়, যেখানে সফলভাবে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।
এই দুর্ঘটনার পর বুধবার ইনস্টাগ্রামে একটি বার্তা দিয়ে মুসিয়ালা বলেন, ‘অস্ত্রোপচার খুব ভালোভাবে হয়েছে, আমি এখন ভালো চিকিৎসায় আছি এবং আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই—এটার জন্য কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই। এমন ঘটনা ফুটবলে ঘটতেই পারে। এখন আমি নিজের শক্তি ও মানসিক দৃঢ়তা ফিরে পাওয়ার দিকে মনোযোগ দেব।’
তার এই বক্তব্যে ফুটবলবিশ্ব মুগ্ধ। অনেকেই প্রশংসা করছেন তার পরিপক্বতা ও ইতিবাচক মানসিকতার।
যদিও মুসিয়ালা কাউকে দোষ দেননি; কিন্তু বায়ার্ন মিউনিখের অন্যরা চুপ ছিলেন না। দলের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দোন্নারুম্মা যেভাবে চ্যালেঞ্জে গিয়েছেন, তাতে তার পক্ষ থেকে বিপদ ঘটানোর ঝুঁকিটা নেওয়াই ছিল। এটা খুবই বিপজ্জনক ছিল।’
এ ছাড়া বায়ার্নের ক্রীড়া পরিচালকের দায়িত্বে থাকা ম্যাক্স এবার্ল বলেন, ‘ওই ধরনের অ্যাকশনে সবসময় বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। এটা নিঃসন্দেহে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।’
চোটের পরপরই দোন্নারুম্মা সামাজিকমাধ্যমে মুসিয়ালার জন্য শুভকামনা জানান এবং লেখেন—‘তোমার জন্য আমার সব প্রার্থনা ও শুভকামনা রইলো।’
উত্তরে মুসিয়ালাও সৌহার্দ্যপূর্ণ ভঙ্গিতে বলেন, ‘ধন্যবাদ তোমার শুভকামনার জন্য, চিন্তা করো না—এটাই ফুটবলের অংশ।’
বায়ার্নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মুসিয়ালার এই গুরুতর চোট তাকে আগামী কয়েক মাস মাঠের বাইরে রাখবে। ফলে আগামী মৌসুমের শুরু থেকেই তাকে পাওয়া যাবে না। ‘এই চোট শুধু মুসিয়ালার জন্য নয়, আমাদের দলের জন্যও বিশাল ধাক্কা,’ বলেন এবার্ল।
২০২০ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে বায়ার্নের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল জামাল মুসিয়ালার। ২০২৪ সালে তিনি হয়েছেন জার্মান জাতীয় দলের বর্ষসেরা খেলোয়াড়। ২০২৩ সালে তিনি গোল্ডেন বয় অ্যাওয়ার্ড-এ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন। গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২১ গোল ও ৮ অ্যাসিস্ট ছিল তার নামের পাশে, যেখানে বায়ার্ন জিতেছিল বুন্দেসলিগা শিরোপা।
মন্তব্য করুন