চার জাতি সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল টুর্নামেন্টে স্বাগতিক বাংলাদেশ উপহার দিল এক নাটকীয় জয়। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে স্কোরলাইন ছিল ২-২। কিন্তু ইনজুরি সময়েরও শেষ মুহূর্তে তৃষ্ণার গোল বাংলাদেশকে এনে দেয় পুর্ণ তিন পয়েন্ট। উমহেলার পা থেকে আসা এক চমৎকার কাউন্টার অ্যাটাকিং পাসে নেপালের রক্ষণভাগ ছিন্নভিন্ন করে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এই ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের শুরু থেকেই ছন্দে ছিল পিটার বাটলারের দল। ১৪ মিনিটে সাগরিকার মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো পাসে মুনকি নেপালের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোলমুখে শট নেন। বল যখন গোললাইনের ঠিক সামনে ঠেকে যায়, তখন তা ফিরিয়ে আনেন গঙ্গা রোকায়া। কিন্তু ছিটকে আসা সেই বল এবার ঠাঁই পায় জালে, শিখার শটে।
৩৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাগরিকা। শান্তি মার্ডির ক্রস থেকে শিখার শট প্রথমে প্রতিহত হলেও, রিবাউন্ডে ঠাণ্ডা মাথায় গোল করেন সাগরিকা। প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-০ গোলে বাংলাদেশের নেতৃত্বে।
৫৪ মিনিটে হঠাৎ বদলে যায় ম্যাচের গতি। সাগরিকা ও নেপালের এক ডিফেন্ডারের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি গড়ায় হাতাহাতিতে। রেফারি দ্ব্যর্থহীনভাবে দুইজনকেই সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়ান। আক্রমণভাগের অন্যতম প্রধান ফুটবলারকে হারিয়ে বাঘিনীরা তখন নিঃস্ব।
এই সুযোগে ম্যাচে ফেরে নেপাল। ৭৫ মিনিটে পেনাল্টি পায় তারা এবং তা থেকেই গোল করে ব্যবধান কমায়। এরপর ৮৬ মিনিটে এক টানা আক্রমণে সমতা আনে নেপাল। ২-২ স্কোরলাইন দেখে মনে হচ্ছিল ভাগ্য বোধহয় পেন্ডুলামের মতোই ঝুলছে।
ইনজুরি সময়ের সপ্তম মিনিটে, যখন সবাই ড্র ধরে নিতে শুরু করেছে, তখন উমহেলার গোছানো কাউন্টার অ্যাটাকিং পাস ধরে তৃষ্ণা রাণী নেপালের রক্ষণ ভেদ করে বক্সে ঢুকে অসাধারণ এক ফিনিশিংয়ে গোল করেন। নেপালের ডিফেন্ডার এবং গোলরক্ষক যেন নড়ার আগেই বল ঢুকে পড়ে জালে!
মাঠে তখন উল্লাস, কান্না, হাহাকার—সব একসাথে। গ্যালারির হাজার খানেক দর্শক তখন দাঁড়িয়ে, হাততালি আর স্লোগানে ফুটিয়ে তোলেন সেই মুহূর্তের আবেগ।
এই টুর্নামেন্টে নেপাল ও বাংলাদেশই শিরোপার প্রধান দাবিদার। তাই এই ম্যাচের জয় মানেই বড় এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। বিশেষ করে যখন বাংলাদেশের এই অনূর্ধ্ব-২০ দলে সিনিয়র দলের একাধিক খেলোয়াড় রয়েছেন, তখন তাদের বিপক্ষে নেপালের প্রতিরোধ যথেষ্ট কঠিন ছিল।
মন্তব্য করুন