রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ফুটবলার ভিনিসিয়ুস বর্ণবাদের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তা নিয়ে সোচ্চার লা লিগা থেকে শুরু করে ফিফাও। তবে ভিনিসিয়ুসের নিজ দেশ ব্রাজিল আরও এক কাঠি সরেস। শুরু থেকেই ভিনিসিয়ুসের পাশে দাঁড়িয়েছে পেলের দেশটি। এবার বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছে সেলেসাওরা। গিনির বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে কালো জার্সি পরে খেলবে ব্রাজিল ফুটবল দল।
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শনিবার (১৭ জুন) স্পেনের বার্সেলোনায় গিনির বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মাঠে নামবে ব্রাজিল।
এই ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের গায়ে দেখা যাবে না চিরচেনা হলুদ জার্সি। দেখা যাবে কালো জার্সি। স্পেনে বর্ণবাদের শিকার হওয়া ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সাথে সংহতি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এটি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তাদের একটি বড় প্রতিবাদ।
স্পেনে ভিনিসিয়ুসের সাথে ঘটে যাওয়া বর্ণবাদী আচরণের ঘটনা হতবাক করেছে পুরো ফুটবল বিশ্বকে। বিশেষ করে ব্রাজিলের ভিতরের আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মানুষদের মধ্যে ভিনিসিয়ুসের সাথে হয়ে যাওয়া ঘটনা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ভিনিসিয়ুস ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে এমনিতেই অনেক জনপ্রিয়। রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকার ফাভেলা (ব্রাজিলের বস্তি) থেকে নিজের মেধা এবং শ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়ার গল্প অনুপ্রেরণা জাগায় সবাইকে। তাই স্পেনে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে আফ্রো-ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে।
এই আলোচনার মধ্যেই ব্রাজিলের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন স্পেনে তাদের প্রীতি ম্যাচের জন্য জার্সি পরিবর্তনের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেয়। স্পেনের বার্সেলোনায় গিনির সাথে ম্যাচে ব্রাজিল তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ কালো জার্সি পরে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। এই পদক্ষেপটিকে সেলেসাওদের ঐতিহাসিক হলুদ জার্সিকে ঘিরে বিতর্কের পরে আসে যখন প্রাক্তন ডানপন্থি রাষ্ট্রপতি জেইর বলসোনারো তার নিজস্ব রাজনৈতিক এজেন্ডার জন্য জাতীয় জার্সিটি ব্যবহার শুরু করেছিলেন।
কালো জার্সি পরার সিবিএফের এই সিদ্ধান্ত তাই শুধু বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাদের চলমান প্রচেষ্টার অংশ নয় একই সাথে ব্রাজিলের ঐতিহাসিক জার্সিকে ঘিরে বিতর্ক ভুলানোর একটি প্রচেষ্টাও বলা চলে।
অনেক ব্রাজিলিয়ানের চোখে বর্ণবাদের প্রতিবাদস্বরূপ কালো জার্সি পরার এই সিদ্ধান্ত একটি সাহসী পদক্ষেপ। এটি অন্য পদক্ষেপের চেয়ে হয়তো কাজে দিবে। কারণ এই প্রতিবাদ পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী ভাষা ফুটবল ব্যবহার করে করা হচ্ছে।
বর্ণবাদবিরোধী সংগঠনগুলোর মতে, ফুটবলে বর্ণবাদের প্রতিবাদের জন্য ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর পদক্ষেপ নেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। কিন্তু এ রকম পদক্ষেপ ছাড়াও তাদের উচিত নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলোর সাথে মিলে ফুটবল থেকে যাতে এই ঘৃণ্য জিনিস পুরোপুরি দূর হয় তা নিশ্চিত করা।
মন্তব্য করুন