

অনেক সময় ফুটবলের গল্প শুরু হয় শোরগোল দিয়ে, শেষ হয় নির্লজ্জ আধিপত্যে। আর যখন নামের পাশে লেখা থাকে ‘লিওনেল মেসি’, তখন সেটি শুধু আধিপত্য নয়—একটি নিখুঁত শাসন। সিনসিনাটির টি-কিউ-এল স্টেডিয়ামে সেই শাসনটাই দেখল দর্শকরা। গোল, অ্যাসিস্ট, রেকর্ড—সবকিছু মিলিয়ে মেসি রচনা করলেন এমন এক রাত, যা ইন্টার মায়ামির স্বল্প ইতিহাসে জায়গা করে নিল নতুন অধ্যায় হিসেবে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) রাতে ৪-০ ব্যবধানে সিনসিনাটিকে উড়িয়ে এমএলএস ইস্টার্ন কনফারেন্স ফাইনালে উঠেছে ইন্টার মায়ামি—ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবার। আর এই সাফল্যের কেন্দ্রে ছিলেন সেই চিরচেনা ১০ নম্বর।
১৯তম মিনিটে মাতো সিলভেটির ক্রসে দুর্দান্ত হেডে মায়ামিকে এগিয়ে দেন মেসি। বিরতির আগেই তিনি সাজান দ্বিতীয় গোল—সিলভেটিকে এমন পাস দেন, যা থেকে লেফট সাইড দিয়ে নিচু শটে বল পাঠান পোস্টের ডান কোণে।
দ্বিতীয়ার্ধে মায়ামির দাপট হয়ে ওঠে আরও নির্মম। ৬২ ও ৭৪তম মিনিটে তাদেও আলেন্দের দুই গোল—দুটোই এসেছে মেসির পাস থেকে। গোলদাতা বদলায়, কিন্তু নির্মাতা ওই একই—মেসি।
এই পারফরম্যান্সে মেসি গড়লেন নতুন এমএলএস প্লে-অফ রেকর্ড। এক পোস্টসিজনে সবচেয়ে বেশি গোল–অবদান—১২ (৬ গোল, ৬ অ্যাসিস্ট)। ৩৮ বছর বয়সেও যেন প্রতিটি ম্যাচে নতুনভাবে ঘোষণা দিচ্ছেন, ফুটবলের রঙটি কেন এখনো তার মুঠোয় শক্তভাবে ধরা।
শেষ দিকে লুইস সুয়ারেজও নেমেছেন, যদিও খেলার গতিপথ তখন অনেক আগেই ঠিক হয়ে গেছে। মায়ামি যে সিনসিনাটিকে নিয়মিত মৌসুমে হারাতে পারেনি—একবার ০-৩ হেরে, একবার ০-০ ড্র—এই ম্যাচে সেই অতীতও মুছে দিল মেসির সৃজনশীলতা এবং দলীয় শৃঙ্খলা।
মাশ্চেরানোর দল এখন প্রস্তুতি নেবে কনফারেন্স ফাইনালের জন্য। প্রতিপক্ষ নিউ ইয়র্ক সিটি এফসি, ম্যাচ ২৯ নভেম্বর, ফোর্ট লডারডেলের চেস স্টেডিয়ামে।
পাশাপাশি সিনসিনাটির দুঃখও বাড়ল আরেকবার। ২০২৪ সালে সাপোর্টার্স শিল্ড জয়ী দলটিই এবার বাড়ি ফিরল নিজেদের মাঠে লজ্জাজনক হারে—মেসির পারফরম্যান্সের উজ্জ্বল আলোয় ঢাকা পড়ে গেল তাদের সব পরিকল্পনা।
মন্তব্য করুন