

২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত হবে ৫ ডিসেম্বর। তারপরই জানা যাবে দলগুলোর প্রতিপক্ষ। তার আগেই সম্ভাব্য ফল বিশ্লেষণ করে দিয়েছে অপটা সুপারকম্পিউটার। যেখানে প্রাথমিকভাবে শিরোপার দাবিদারদের তালিকা প্রকাশ পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর ১৬ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিশ্বকাপ। এবার দলসংখ্যা ৩২ থেকে ৪৮-এ উন্নীত হয়েছে, ম্যাচ সংখ্যা ৬৪ থেকে ১০৪-এ উন্নীত হয়েছে। এখনো ৬ স্পট ফাঁকা—চার দল আসবে ইউরোপীয় প্লে-অফ থেকে এবং দুটি আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফ থেকে।
অপটা সুপারকম্পিউটারের দৃষ্টিতে, কোন দলের শিরোপা জেতার সম্ভাবনা কত শতাংশ
স্পেন ১৭.০%
স্পেনের ধারাবাহিকতা চলছেই—টানা ৩১ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অপরাজিত (২৫ জয়, ৬ ড্র), যা ভিসেন্তে দেল বস্কের সময়কার ৩০ ম্যাচের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে। স্পেনকে সুপারকম্পিউটার ১৭ শতাংশ সম্ভাবনায় শিরোপার সবচেয়ে বড় দাবিদার হিসেবে দেখছে।
ফ্রান্স ১৪.১%
কিলিয়ান এমবাপ্পে এবার প্রথমবারের মতো ফ্রান্সের অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে খেলবেন। তিনি এরই মধ্যে ৯৩ ম্যাচে ৫৫ গোল করেছেন এবং অলিভিয়ের জিরুর ৫৭ গোলের রেকর্ড ভাঙার পথে। দল হিসেবে ফ্রান্সের সম্ভাবনা ১৪.১ শতাংশ।
ইংল্যান্ড ১১.৮%
টুখেল যদি শিরোপা জেতেন, তিনি হবেন মাত্র তৃতীয় কোচ, যিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও বিশ্বকাপ দুটিই জিতেছেন। সার্বিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলের জয় তাদের সামর্থ্য দেখিয়েছে। নতুন তারকা এলিয়ট অ্যান্ডারসন ডিক্লান রাইসের সঙ্গী হয়ে মিডফিল্ডে শক্তি জোগাচ্ছেন।
আর্জেন্টিনা ৮.৭%
লিওনেল মেসি ২০২২ সালে কাতারে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যক্তিগত বিশ্বকাপ নৈপুণ্য দেখান—৭ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গ্রুপ পর্ব থেকে ফাইনাল পর্যন্ত প্রতি ধাপে গোল করেন। এবার মেসির সামনে সুযোগ আছে এমন কিছু করার, যা ম্যারাডোনাও পারেননি—দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতা। আর্জেন্টিনা বাছাইপর্বে ইকুয়েডরের চেয়ে ৯ পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে ছিল এবং কোপা আমেরিকাও ধরে রেখেছে।
জার্মানি ৭.১%
২০১৪ সালের ফাইনালের পর থেকে জার্মানি আর কোনো বিশ্বকাপ নকআউট ম্যাচ খেলেনি। ইউরো ২০২৪-এ তারা কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেছে এবং টানা চার বড় আসরে সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। বাছাইপর্বেও তাদের পথ সহজ ছিল না—শেষ ম্যাচে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে জয় পেতে হয়েছিল প্লে-অফ এড়াতে। যদিও কোচ জুলিয়ান নাগেলসম্যানকে গোলকিপার ও মিডফিল্ডে নতুন সমাধান খুঁজতে হচ্ছে।
পর্তুগাল ৬.৬%
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে আল-নাসরে যাওয়ার পর অনেকে ভেবেছিল তিনি আলোচনার বাইরে চলে যাবেন। কিন্তু তিনি এখনো শিরোনামে আছেন। ফিফা সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লাল কার্ডের কারণে তিনি তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হবেন না, ফলে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই খেলতে পারবেন। মেসি কাতারে বিশ্বকাপ জেতার পর এবার রোনালদোর সামনে সুযোগ আছে নিজস্ব মুকুট অর্জনের। পর্তুগালের দলে প্রচুর প্রতিভা আছে—পিএসজির ভিতিনহা, জোয়াও নেভেস ও নুনো মেন্ডেস দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়েছেন। ম্যানচেস্টার ভিত্তিক রুবেন দিয়াজ, বের্নার্দো সিলভা ও ব্রুনো ফার্নান্দেজও অভিজ্ঞ এবং দক্ষ। সবাইকে ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবেন রোনালদোই।
ব্রাজিল ৫.৬%
ব্রাজিলই একমাত্র দল, যারা প্রতিটি বিশ্বকাপে খেলেছে। এবারের বাছাইপর্বে তারা কিছুটা হোঁচট খেয়েছে, কনমেবল অঞ্চলে পঞ্চম হয়ে শেষ করেছে। কার্লো আনচেলত্তি দায়িত্ব নিয়েছিলেন শেষ পাঁচ ম্যাচে। আট মাসেরও কম সময়ে তিনি বলিভিয়া ও জাপানের কাছে হেরেছেন, আবার ইকুয়েডর ও তিউনিসিয়ার সঙ্গে ড্র করেছেন। এবারও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্ভাবনা ৫.৬ শতাংশ ধরা হচ্ছে।
নেদারল্যান্ডস ৫.২%
নেদারল্যান্ডস তিনবার ফাইনালে উঠে কখনো বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। এবার তাদের সম্ভাবনা ৫.২ শতাংশ। ইউরো ২০২৪-এ তারা সেমিফাইনালে উঠেছিল, যা ২০১৪ বিশ্বকাপের পর তাদের সেরা সাফল্য। বর্তমানে দলে ইংলিশ ফুটবলের প্রভাব অনেক বেশি। দলটির বেশিরভাগই খেলোয়াড়ই প্রিমিয়ার লিগে বিভিন্ন ক্লাবে দাপটের সঙ্গে খেলছে।
মন্তব্য করুন