সাফ বঙ্গবন্ধু চ্যাম্পিয়নশিপে আবারও স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের। আজ শনিবার বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে কুয়েতের বিপক্ষে লড়াকু ফুটবল খেলে শেষ দিকে গোলে হেরে যায় লাল-সবুজরা। অতিরিক্ত সময়ে ১-০ গোলের হারে শেষ হয় জামাল-তপুদের এবারের সাফ মিশন।
দুই দলের শক্তিমত্তার বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে কুয়েত। কিন্তু ম্যাচজুড়ে দারুণ লড়াইয়ে জামাল-মোরছালিনরা তা মনে হতে দেয়নি। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত একের পর এক আক্রমণে তারা কুয়েত রক্ষণের পরীক্ষা নিয়েছেন। সুযোগও পেয়েছিলেন তারা বাংলাদেশকে লিড দেওয়ার।
অন্যদিকে কুয়েতের সামনে চীনের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশের গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো। দুর্দান্ত সব সেভে সামলেছেন গোলপোস্ট। কিন্তু ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়াতেই বাংলাদেশ পথ ভুলে যায়। ১০৬ মিনিটে কুয়েতের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন আব্দুল্লাহ।
এর আগে গোলশূন্য সমতার পর ম্যাচটি গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। প্রথমার্ধের নির্ধারিত ১৫ মিনিট শেষ হতেই রেফারি দুই মিনিট ইনজুরি সময় দেন। যার প্রথম মিনিটেই গোল হজম করে বাংলাদেশ। সংঘবদ্ধ আক্রমণে বক্সের মধ্যে বল ঠেলে দেন কুয়েত মিডফিল্ডার। সেখানে কুয়েত ফুটবলার আব্দুল্লাহর মার্কিংয়ে ছিলেন পরীক্ষিত ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। কিন্তু আব্দুল্লাহর চৌকস শট ডিফেন্সকে বোকা বানিয়ে জড়ায় বাংলাদেশের জালে। জিকো কিছু বুঝে উঠতে পারার আগেই বল পোস্টের জাল স্পর্শ করে।
পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ শেষদিকে প্রচণ্ড চাপ দিলেও আদায় করে নিতে পারেনি সমতাসূচক গোল। ১১৭তম মিনিটে বিশ্বনাথের লং পাস ধরে রাকিব একটু দুরূহ কোণে চলে গেলেও জোরাল শট নেন, গোলরক্ষক পা দিয়ে কোনোমতে আটকান। এ অর্ধের যোগ করা সময়ে সুমনের শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে কর্নার হয়। রবিউলের কর্নার ক্লিয়ার হলে থ্রো ইন পায় বাংলাদেশ। কিন্তু তাও ক্লিয়ার হয়।
একটু পরই বিশ্বনাথের দূরপাল্লার শট কোনোমতে আটকান গোলকিপার মারজুক। এরপর শেষের বাঁশি বাজতেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। তবে দলের স্টাফদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশ গোলের সুযোগ পেয়েছিল। গত দুই ম্যাচে গোল করা তরুণ ফুটবলার মোরছালিন রাকিবের বাড়ানো বলে গোলকিপারকে একা পেয়েও প্লেসিং করতে পারেননি। এরপর কুয়েত কয়েকটি আক্রমণ করে। ডিফেন্ডার ইসা ফয়সাল একটি গোললাইন সেভ করেন প্রথমার্ধেই।
দ্বিতীয়ার্ধে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। মোরছালিনের বাড়ানো বলে রাকিব বক্সে প্রবেশ করে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে শটও নিয়েছিলেন। এবার বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার।
২০০৯ সালের পর সাফে সেমিফাইনালে প্রথম উঠেছিল বাংলাদেশ। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দলের সামনে হাতছানি ছিল ২০০৫ সালের পর প্রথম ফাইনালে ওঠার। কিন্তু দুর্দান্ত লড়াই করেও পারলেন না জামাল-জিকোরা। অতিথি দল হিসেবে সাফে প্রথম খেলতে এসেই ফাইনালের মঞ্চে উঠল কুয়েত।
মন্তব্য করুন