বর্তমান সময়ের ফুটবল ভক্তদের জহিরুল হকের নামটা মনে থাকার কথা নয়। তবে ষাটের দশকে এই নামটি ছিল এই দেশের ফুটবল ভক্তদের অনেক পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডানের চারবারের অধিনায়ক, যিনি নানা বৈষম্যের মধ্যেও খেলেছেন সেই সময়ের পাকিস্তান দলে। আজ শনিবার ফুটবল ভক্তদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি।
৮৮ বছর বয়সী সাবেক এই ফুটবলার গত কয়েক বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। শারীরিক নানা জটিলতা এবং বার্ধক্যজনিত কারণে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন আজ। বাদ মাগরিব জহিরের জানাজা ঢাকার ফার্মগেটস্থ খেজুর বাগান মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। তার মৃত্যুতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব শোক জানিয়েছে এবং তার প্রতি সম্মান জানিয়ে পতাকা অর্ধনমিতও রাখা হবে।
ক্রীড়াঙ্গনে অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করা হয় ১৯৭৬ সাল থেকে। এই পুরস্কারের আগে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির পুরস্কারই ছিল ক্রীড়াঙ্গনে প্রথম স্বীকৃতি। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্রীড়া লেখক সমিতি দুই বছর পর সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার প্রদান করে। সেই সেরা খেলোয়াড়ের প্রথম পুরস্কার পাওয়া ক্রীড়াবিদ জহিরুল হক। ষাটের দশকের এই কিংবদন্তিকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করা হয় ২০০১ সালে।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে হাতে গোনা যে কজন ফুটবলার পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলেছিলেন, তিনি ছিলেন তাদেরই একজন। সেই পরিচয় ছাপিয়ে জহিরুল হক স্বমহিমায় উদ্ভাসিত ছিলেন ঢাকা মোহামেডানের জার্সিতে। ১৯৬০ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত সাদা–কালো শিবিরে কাটিয়ে হয়ে ওঠেন মোহামেডানের ঘরের ছেলে, ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির কিংবদন্তি ফুটবলারদেরও একজন। মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন পাঁচবার। তাকে ‘মোহামেডানের জহির ভাই’ বলেই বেশি ডাকতেন সমকালীন ফুটবলাররা। রাইটব্যাকে তাঁর মতো ফুটবলার কমই এসেছেন এই ভূখণ্ডে। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
মন্তব্য করুন