ইন্টার মায়ামির হয়ে ম্যাচ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অধ্যায় শুরু হলো আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসির। নিজের অভিষেকটাও বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক রাঙালেন চমৎকারভাবে। লিগ কাপে ক্রুজ আজুলের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নামেন আর্জেন্টাইন তারকা। বদলি হিসেবে নেমে যোগ করা সময়ে ফ্রি-কিকে চমৎকার একটি গোল করেন। যা ছয় ম্যাচ পর মেসির নতুন ক্লাবকে এনে দেয় জয়ের স্বাদ।
ক্রুজ আজুলের বিপক্ষেই মায়ামির জার্সি গায়ে মেসির অভিষেক হচ্ছে এটি আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল। লিওনেল মেসিকে বেঞ্চে রেখে শুরুর সম্ভাবনার কথা আগেই বলেছিলেন ইন্টার মায়ামি কোচ জেরার্দো টাটা মার্তিনো। গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের তাই ছিল অপেক্ষা কখন নামবেন মেসি মাঠে। প্রথমার্ধের পুরোটা সময় বেঞ্চে বসেই কাটাতে হয় সাত বারের ব্যালন ডি’অর জয়ীকে। ৪৪ মিনিটে দলের প্রথম গোলের পর সেখানে বসেই করেছেন উদ্যাপন।
অবশেষে মায়ামির দর্শকদের মেসির খেলা দেখার অপেক্ষা ফুরোয় ম্যাচের ৫৪ মিনিটে। দীর্ঘ দিনের বার্সা সতীর্থ সার্জিও বুসকেটসের সঙ্গে একসাথে মাঠে নামেন দুইজন। মেসি নামার পর ৬৫ মিনিটে গোল খেয়ে বসে মায়ামি। গোল করে মেক্সিকান ক্লাব ক্রুজ আজুলকে সমতায় ফেরান ইউরিয়েল আনতুনা।
মাঠে নেমেই আর্জেন্টাইন মহাতারকা নিজের চিরচেনা খেলা খেলতে শুরু করেন। দুর্দান্ত রক্ষণচেরা পাস, বল নিয়ে দৌড় এবং ড্রিবলিংয়ের জাদুতে মোহিত করেছেন সবাইকে। কয়েকবার প্রতিপক্ষ ডিফেন্সের জন্য হুমকিও তৈরি করেছিলেন। পাশাপাশি শুরুর দিকে দলের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে না পারার ছাপও ছিল। নতুন পরিবেশে প্রথম ম্যাচে যা অবশ্য স্বাভাবিক।
মেসিকে একাদশে না রাখলেও ডিআরবি পিএনকি স্টেডিয়াম ছিল পুরোপুরি মেসির। মেসির অভিষেকের দিন উত্তাপ আরও বাড়িয়েছেন গ্যালারিতে উপস্থিত তারকারা। ইন্টার মায়ামি মালিক ডেভিড বেকহাম তো ছিলেনই, এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে মেসির সাবেক সতীর্থ সার্জিও আগুয়েরো, বাস্কেটবল মহাতারকা লেব্রন জেমস, টেনিস কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামস এবং মডেল কিম কারদাশিয়ানকে দেখা গেছে দর্শক সারিতে।
মেসিকে পেয়ে নতুন উদ্যোমে জেগে ওঠার ছাপ স্পষ্ট ছিল ইন্টার মায়ামির খেলাতেও। শুরু থেকেই ক্রুজ আজুলের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়ে খেলেছে তারা। খেলা দেখে মনেই হচ্ছিল না মে মাসের ১৪ তারিখের পর লিগে আর কোনো জয় পায়নি দলটি। ইতিবাচক ফুটবলের ফল পেতে ইন্টার মায়ামিকে অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ম্যাচে ৪৪ মিনিট পর্যন্ত। বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রবার্তো টেইলর।
যদিও শেষ পর্যন্ত সেই লিড ৬৫ মিনিটে হারায় তারা। এরপর মেসি দলকে নিয়ে বেশ চেষ্টা করে গেছেন দ্বিতীয় গোলের। একাধিকবার সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছিলেন। কিন্তু ক্রুজ আজুলের রক্ষণ দেয়াল টপকে শেষ পর্যন্ত সেই কাঙ্ক্ষিত গোলটি আর পাওয়া হচ্ছিল না তাদের। ৮৭ মিনিটে একবার অবশ্য সতীর্থকে পাস দিয়ে গোলও করিয়েছিলেন মেসি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই গোলটি বাতিল হয়েছে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে। এরপর ৯০ মিনিটে আরও একবার বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন প্রতিপক্ষের ডি–বক্সে কিন্তু এবার মেসিকে আটকে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। আর অন্তিম মুহূর্তে ফ্রি–কিকেই জাদু দেখালেন মেসি। আর ইন্টার মায়ামি পেল নাটকীয় এক জয়।
মন্তব্য করুন