আমরা অনেকেই এখন দিনের অনেকটা সময় ফোনে স্ক্রল করেই কাটিয়ে দিই। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষা প্রাণীর ভিডিও, বন্ধুদের ঘোরাঘুরির ছবি বা কোনো মজার ভিডিও দেখতে দেখতে কখন যে ঘণ্টা কেটে যায়, বুঝতেই পারি না আমরা।
এই ফোন স্ক্রলিংয়ের অভ্যাসটা অনেকের জন্য এখন যেন এক ধরনের নেশায় পরিণত হয়েছে। কেন এমন হয়? চলুন বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জেনে নিই এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে কী করা যায়—এ নিয়েই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
কেন এত স্ক্রল করি?
যুক্তরাজ্যের লিডস বেকেট ইউনিভার্সিটির এক মনোবিজ্ঞানী এইলিশ ডিউক জানান, ‘আমরা বুঝতেই পারি না কখন ফোনটা হাতে নিই আর স্ক্রল করতে শুরু করি। এটা এমন এক অভ্যাস হয়ে গেছে, যেটা নিজেও খেয়াল করি না।’
এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ ভাবে তারা প্রতি ১৮ মিনিটে একবার ফোন দেখে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, তারা আরও অনেক বেশি সময় ফোনে চোখ রাখে।
মস্তিষ্কে কী হয়?
আমাদের মস্তিষ্ক নতুন কিছু পেলে বা ভালো কিছু দেখলে সুখানুভূতি তৈরি করে। এটা এমন এক অনুভূতি, যেটা আবার পেতে মস্তিষ্ক বার বার আগ্রহী হয়। ঠিক যেমন চকলেট খেয়ে ভালো লাগে, বা প্রিয় গান শুনলে মন ভালো হয়ে যায়। তেমনই ফোনে মজার বা ভালো কিছু দেখেও এমন অনুভূতি তৈরি হয়। আর তাই আমরা বারবার স্ক্রল করতে থাকি।
তবে মস্তিষ্কের একটা অংশ আবার আমাদের বলে, ‘থামো, কাজ করো’। কিন্তু সেটা সবসময় সফল হয় না, বিশেষ করে তরুণদের ক্ষেত্রে।
বিশেষজ্ঞদের মতে স্ক্রলিং কমানোর ৩টি সহজ উপায়
ফোন থেকে কিছু সময় দূরে থাকুন
রেগুলার বিরতি নিন। ফোন পাশে না রেখে বাইরে হাঁটতে যান, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন বা জিমে যান। ফোন থেকে দূরে থাকলে মস্তিষ্কও একটু বিশ্রাম পায়।
বাস্তব জিনিসে মন দিন
যা কিছু আপনি ফোনে করেন, চেষ্টা করুন তা ফোন ছাড়া করার। যেমন সময় দেখার জন্য সাধারণ ঘড়ি ব্যবহার করুন, বা অনলাইনে না পড়ে কাগজের বই পড়ুন। এতে স্ক্রল করার সুযোগ কমে যায়।
নিজের অভ্যাস নিয়ে ভাবুন
ফোন তুললে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন—‘আমি এটা এখন কেন করলাম?’ সচেতনভাবে ভাবতে পারলে নিজের আচরণ বদলানো সহজ হয়। যেমন, ক্ষুধা পেলে যেমন বুঝতে পারি খেতে হবে, তেমনি ফোন স্ক্রল করার আগেও নিজেকে প্রশ্ন করতে পারেন—এটা এখন দরকার কি না?
ফোন স্ক্রল করাটা স্বাভাবিক, কিন্তু যদি তা সময় নষ্ট করে ফেলে বা কাজে বাধা দেয়, তাহলে একটু সচেতন হওয়া দরকার। ধীরে ধীরে অভ্যাস বদলানো সম্ভব—শুধু প্রয়োজন একটু ইচ্ছা আর সচেতনতা।
মন্তব্য করুন