নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় কিশোরী ও গৃহবধূকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর এবং প্রতিবাদকারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। সংগঠনটি অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মঙ্গলবার (১০ জুন) কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের ধনাচাপুর গ্রামে সাইদুল ইসলামের বাড়ির সামনে কয়েকজন কিশোরী ও গৃহবধূ দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় আমিন মিয়া, সজীব মিয়াসহ কয়েকজন বখাটে তাদের উত্ত্যক্ত করে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বিষয়টি সাইদুল ইসলামের ছোট ভাই আনিসুর রহমানকে জানালে তিনি বখাটেদের সঙ্গে কথা বলতে যান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয় এবং স্থানীয়রা বখাটেদের সরিয়ে দেন।
কিছুক্ষণ পরই বখাটেরা আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আনিসুর রহমানের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে প্রতিবাদকারী আনিসুর রহমানসহ আরও কয়েকজন আহত হন। গুরুতর অবস্থায় আহতদের কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনিসুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে যে, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের সময় নারী ও কন্যাশিশুরা এখনো স্থানীয় বখাটেদের দ্বারা যৌন নির্যাতন ও উত্ত্যক্তকরণের শিকার হচ্ছে। এ ধরনের সহিংসতা নারীর স্বাভাবিক জীবনযাপন ও স্বাধীন চলাচলের নিরাপত্তাকে বাধাগ্রস্ত করছে। একইসঙ্গে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় প্রতিবাদকারী ব্যক্তির ওপর হামলা ও মৃত্যুর ঘটনা নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ আন্দোলনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যা সার্বিকভাবে নারী ও কন্যার উন্নয়নের পথে অন্তরায়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে নারীর স্বাধীন চলাচল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেছে। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের আলোকে যৌন নিপীড়ন ও উত্ত্যক্তকরণ বন্ধে যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি গঠন এবং গঠিত কমিটি যথাযথভাবে কাজ করছে কিনা তা মনিটরিং করার বিষয়েও সংগঠনটি অনুরোধ জানিয়েছে।
পরিশেষে, নারীর প্রতি সব প্রকার অপতৎপরতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
মন্তব্য করুন