সেনা অভ্যুত্থানকারীদের হটিয়ে নির্বাচিত সরকারকে পুনর্বহাল করতে নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা করেছে পশ্চিম আফ্রিকার ১৫ দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট ইকোওয়াস। গতকাল শুক্রবার (৫ আগস্ট) জোটের সামরিক নেতারা এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ইকোওয়াসের রাজনীতি, শান্তি ও নিরাপত্তাবিষয়ক কমিশনার আবদেল-ফাতাউ মুসা বলেন, ইকোওয়াস কখন ও কোথায় হামলা করবে তা অভ্যুত্থানকারীদের কাছে প্রকাশ করা হবে না। তবে এ বিষয়ে জোটের রাষ্ট্রপ্রধানরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।
নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় তিন দিনের বৈঠক শেষে মুসা জানান, নাইজারে কীভাবে সামরিক হস্তক্ষেপ করা হবে এবং এ জন্য কী প্রয়োজন হতে পারে সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
গত ২৬ জুলাই নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে তার বাসভবনে অবরোধ করে রাখেন প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের বিদ্রোহী সদস্যরা। আটকের পরের দিন বৃহস্পতিবার সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেন তারা।
এরপরই দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পক্ষে-বিপক্ষে সমাবেশ করতে থাকেন সাধারণ মানুষ। এমনকি সমাবেশ থেকে প্রেসিডেন্টের দলের প্রধান কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে অভ্যুত্থানের সমর্থকরা। ফলে প্রেসিডেন্ট সমর্থক ও অভ্যুত্থানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত থেকে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
আরও পড়ুন : নিজেকে নাইজারের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করলেন জেনারেল আবদোরাহমানে
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে উৎখাতের পর ২৮ জুলাই নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান জেনারেল আবদোরাহমানে চিয়ানি।
অভ্যুত্থানের পরই নাইজারের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইকোওয়াস। এমনকি আগামী রোববারের মধ্যে বাজুম সরকারের হাতে পুনরায় ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে বলপ্রয়োগের কথা জানিয়েছে জোটটি।
এমন কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি নাইজার সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানও চেয়েছিল ইকোওয়াস। এ জন্য তারা নাইজারে গত বৃহস্পতিবার একটি প্রতিনিধি দলও পাঠিয়েছিল। তবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এবার সামরিক হস্তক্ষেপের দিকে হাঁটছে জোটটি।
তবে বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপের নিন্দা করেছে নাইজারের জান্তা সরকার। তারা বলছে, এমন হলে তারাও পাল্টা লড়াই করবে। এ ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করার কথা জানিয়েছে প্রতিবেশী মালি ও বুরকিনা ফাসো। এ দুই দেশও ইকোওয়াসের সদস্য।
মন্তব্য করুন