পশ্চিম আফ্রিকার ১৫ দেশ নিয়ে গঠিত জোট ইকোওয়াস নাইজারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করেছে। দেশটিতে গত মাসের শেষদিকে প্রেসিডেন্ট বাজোমকে সেনাবাহিনীর বিদ্রোহী দল অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আটক করে ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে বিভিন্ন বার্ত দিয়ে আসছে ইকোওয়াস। খবর আলজাজিরার।
ইকোওয়াসের এ শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, জোটের স্ট্যান্ডবাই ফোর্সকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। দেশটিতে সবশেষ কূটনৈতিক পদক্ষেপ ব্যর্থ হলে সামরিক হস্তক্ষেপ করবে ইকোওয়াস। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) এক কৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
ঘানার রাজধানী আক্রায় এক বৈঠকে ইকোওয়াসের রাজনৈতিক, শান্তি ও নিরাপত্তা কমিশনার আবদেল ফাতাও মুসাহ বলেন, আমরা নির্দেশ দেওয়ার সাথে সাথে অভিযানের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। দেশটিতে সামরিক হস্তেক্ষেপের তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য আমরা সবাই সম্মত হয়েছি এবং করণীয় ঠিক করেছি। তবে এখনো নাইজারের সামরিক নেতাদের শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) নাইজারের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপে গঠিত স্ট্যান্ডবাই ফোর্সে যোগ নিতে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো প্রস্তুত বলে জানায় ইকোওয়াস। ওই সময়ে নাইজেরিয়ার প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান জেনারেল ক্রিস্টোফার গোবিন মুসা বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য দাঁড়িয়েছি এবং আমরা এটাকেই পৃষ্ঠপোষকতা করি। আমদের এ ফোর্স গঠন শুধু কেবল প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য নয়। আমাদের মূল লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
তারও আগে ইকোওয়াস গত ৬ আগস্টের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে পুনর্বহালের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। এটি না মানলে নাইজারের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর কড়া বার্তাও দিয়েছিল এ জোট। এরপর গত ১০ আগস্ট নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকার পুনর্বহালে সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য স্ট্যান্ডবাই সেনাদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল ইকোওয়াস।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে তার বাসভবনে অবরোধ করে রাখে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের বিদ্রোহী সদস্যরা। আটকের পরের দিন বৃহস্পতিবার সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় তারা। এরপরই দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পক্ষে-বিপক্ষে সমাবেশ করতে থাকে সাধারণ মানুষ। এমনকি সমাবেশ থেকে প্রেসিডেন্টের দলের প্রধান কার্যালয়ে আগুন দেন অভ্যুত্থানের সমর্থকরা। ফলে প্রেসিডেন্ট সমর্থক ও অভ্যুত্থানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত থেকে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
মন্তব্য করুন