কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মিয়ানমার জান্তার পতন হতে যাচ্ছে?

মিয়ানমার জান্তা সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। ছবি : সংগৃহীত
মিয়ানমার জান্তা সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ ও মনিপুর সীমান্তবর্তী চিন প্রদেশ এখন জান্তা সরকারের হাতছাড়া। বিদ্রোহীদের ধারাবাহিক হামলার জেরে জান্তা সেনার গতিবিধি এখন রাজধানী নাইপিদো, বাণিজ্য রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ কিছু শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

মরণপণ প্রতিরোধ নয়, গত এক মাসে রাখাইন এবং চিন প্রদেশের একের পর এক ঘাঁটি বিনাযুদ্ধে বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দিয়েছে মিয়ানমার সেনারা। সে সঙ্গে ক্রমশ বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন বাড়ছে জনসাধারণের। এ পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়ছে জান্তা সরকারের। সম্প্রতি ইয়াঙ্গুনের হামাউবি টাউনশিপে নারী অফিসার ক্যাডেটদের ‘পাসিং আউট’ অনুষ্ঠানে জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের বক্তৃতায়ও সেই উদ্বেগ ধরা পড়েছে।

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির সমর্থক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাওয়াদি’ জানিয়েছে, মিয়ানমারের আম-জনতার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সদ্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী সেনা অফিসারদের কাছে অনুরোধ করেছেন জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং।

খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের গত এক বছরের গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে চলতি মাসে। চলতি মাসের গোড়ার দিকে বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাডারহুড অ্যালায়েন্স’-এর বৃহত্তম শরিক আরাকান আর্মি দখল করে নেয় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশ। এর পরে রোববার রাতে মনিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশের দখলও নিয়ে নিয়েছে বিদ্রোহী জোটের আরেক শরিক!

এরপর বুধবার আরাকান আর্মি এবং তাদের সহযোগী কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি ইরাবতী নদীর অববাহিকায় অবস্থিত থান্ডওয়ে নৌঘাঁটি এবং অদূরের গাওয়া শহর দখল করে নিয়েছে। গত ১৩ মাসের গৃহযুদ্ধে এ প্রথম ইরাবতী অববাহিকায় অনুপ্রবেশ করল বিদ্রোহীরা। গাওয়ার অদূরে সৈকত শহর এনগাপালিতে জান্তা সেনার ‘ওয়েস্টার্ন কমান্ড’-এর সদর দপ্তরও বিনা যুদ্ধে বিদ্রোহী বাহিনীর কব্জায় চলে গেছে বলে সূচি সমর্থক গণতন্ত্রপন্থিরা দাবি করেছেন।

গাওয়া শহর থেকেই সড়ক পথ গেছে সোজা রাজধানী নাইপিদো এবং বাণিজ্য রাজধানী ইয়ঙ্গুনের দিকে। এর ফলে জান্তা সরকার অস্তিত্বের সংকটে পড়তে চলেছে বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। এই আবহে জান্তার উপর চাপ বাড়িয়েছে সাদা পতাকা নিয়ে সেনাদের আত্মসমর্পণের বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ।

বস্তুত, বিদ্রোহীদের ধারাবাহিক হামলার জেরে জান্তা সেনার গতিবিধি এখন নাইপিদো, ইয়াঙ্গুন এবং আরও কিছু বড় জনপদ-শিল্পাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কিন্তু বিদ্রোহী জোট সে এলাকাগুলো সহজে দখল করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ানমারের রাজধানীসহ বড় জনপদগুলোতে মূলত সংখ্যাগুরু বামার জনগোষ্ঠীর বাস। তাদের বড় অংশই জান্তা সরকারের সমর্থক। প্রভাবশালী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এখনো জান্তার পাশে রয়েছেন।

অন্যদিকে, মূলত প্রান্তিক এলাকার আরাকান, কাচিন, শান, কারেনের মতো জনজাতি গোষ্ঠীগুলো রয়েছে বিদ্রোহীদের জোটে। সেই অঙ্কেই জান্তা সরকার প্রতিরোধের ছক তৈরি করছে বলে সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’। তবে বড় শহরগুলোর বাইরে কার্যত পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জান্তা সরকার কতক্ষণ ক্ষমতায় টিকে থাকে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিলেটের সাদাপাথর লুটের ঘটনায় সিআইডির অনুসন্ধান শুরু

হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন ৬ সেপ্টেম্বর

ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালালের বিরুদ্ধে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ

ডাকসু নির্বাচন / ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার দায়ে বাদ জুলিয়াস সিজার

ধর্ষণসহ হত্যায় ফুফাতো ভাইয়ের যাবজ্জীবন

কাজী নজরুলের কবিতা দেশের মুক্তিকামী মানুষকে সাহস যুগিয়েছে : তারেক রহমান

‘রোহিতকে সরানোর জন্যই ব্রঙ্কো টেস্ট এনেছে বিসিসিআই’

অভিনেত্রী হিমুর আত্মহত্যা, প্রেমিক রাফির বিচার শুরু

ভারতে প্রয়াত ক্রিকেটারদের স্ত্রীরা পাবে অনুদান

রাজধানীতে একক ব্যবস্থায় বাস চলবে : প্রেস উইং

১০

ভিনিকে বিক্রি করে দিতে বললেন রিয়াল কিংবদন্তি

১১

নতুন বিচারপতিদের মধ্যে সংখ্যালঘু নেই, ঐক্য পরিষদের ক্ষোভ

১২

বিসিবির হাতে বিপিএলের স্পট ফিক্সিং তদন্ত প্রতিবেদন

১৩

ফেসবুকের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন মাওলানা মামুনুল হক

১৪

চুল পড়া রোধ করবে যে জিনিস

১৫

ডাকসু নির্বাচনে সাত সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন

১৬

সাদাপাথরকাণ্ডে এবার পুলিশে বড় রদবদল

১৭

৪৫ বছর ধরে ঝুপড়ি ঘরে থাকা সেই দম্পতির পাশে ইউএনও

১৮

শুনানিতে বিএনপি-এনসিপির মারামারির ঘটনায় ইসির জিডি

১৯

পাঁচ মাসে ১২ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রস্তাব পেল বিডা

২০
X