কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণে রেকর্ড গড়েছে চীন; কক্ষপথে স্থাপনের জন্য একটি রকেটে পাঠানো হলো ৪১টি স্যাটালাইট। বৃহস্পতিবার ‘লং মার্চ ২ ডি’ নামে একটি রকেট ব্যবহার করে এসব উপগ্রহ কক্ষপথে পাঠানো হয়।
‘লং মার্চ’ সিরিজের রকেট এই প্রথম মহাকাশে গেল, এমটা নয়; এর আগে ৪৭৫টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এই সিরিজের রকেট দিয়ে।
এর আগে এতগুলো কৃত্রিম উপগ্রহ এক মিশনে পাঠানো হয়নি; এটা চীনের জন্য নতুন রেকর্ড। পৃথিবীর বাইরেও যে চীনের আধিপত্য বাড়ছে, মহাকাশে একের পর এক স্যাটেলাইট পাঠিয়ে সেই বার্তাই দিচ্ছে শি জিনপিং প্রশাসন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে চীনের শানজির প্রদেশের ‘তাইওয়া স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার’ থেকে এই রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়। নতুন করে পাঠানো এসব উপগ্রহের মধ্যে ৩৬টি জিলিন-১ সিরিজের বলে জানানো হয়। মূলত বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হবে এসব কৃত্রিম উপগ্রহ।
এই উপগ্রহগুলোগুলোকে বলা হয়, রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট। মূলত কোনো সুনির্দিষ্ট এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য এ উপগ্রহ ব্যবহার করা হয়। এই সিরিজের কৃত্রিম উপগ্রহগুলো চীনের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি।
লং মার্চ ২ ডি’ রকেট টাইপের প্রধান ডিজাইনার লি জিয়ানকিয়াং চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘সবশেষ মিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রকৌশলীদের নিশ্চিত করা যে, স্যাটেলাইটগুলি রকেটের পেলোড ফেয়ারিংয়ের ভিতরে নিরাপদে সাজানো হয়েছে এবং বাইরের মহাকাশে প্রবেশ করার পরেই তাদের নির্ধারিত কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে।’
চীন ২০১৫ সালে জিলিন-১ সিরিজের প্রথম উপগ্রহ পাঠিয়েছিল। সেই সময় এর ওজন ছিল ৪২০ কেজি। প্রযুক্তির উন্নয়নে এই সিরিজের কৃত্রিম উপগ্রহ আরও আধুনিক হয়েছে। এখন চীন বলছে, তাদের এই সিরিজের কৃত্রিম উপগ্রহের ওজন মাত্র ২২ কেজি।
চীনের মহাকাশ পরিকল্পনা শুধু মহাকাশ কেন্দ্র তৈরিতে সীমাবদ্ধ নেই। চীন পৃথিবী পৃষ্ঠের কাছ থেকে গ্রহাণুর বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করতে চায়। চীনের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে তারা নভোচারী পাঠাবে এবং মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহ থেকে নমুনা আনার জন্য তারা অনুসন্ধানী প্রোব মহাকাশ যান পাঠাবে।
মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে চীন বিশ্বের তৃতীয় দেশ যারা মহাকাশে নভোচারী পাঠিয়েছে এবং একই সঙ্গে মহাকাশে স্পেস স্টেশন বা মহাকাশ কেন্দ্র তৈরি করছে। এর আগে যে দুই দেশ এই দুটি উদ্যোগ নিয়েছিল তারা হল রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র।
মন্তব্য করুন