সাধারণ জনগণের বয়স গণনায় নতুন পদ্ধতিতে গ্রহণ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ পরিবর্তনের ফলে দেশটির ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের বয়স এক রাতের মধ্যে এক অথবা দুই বছর পর্যন্ত কমে গেছে।
বয়স গণনার ক্ষেত্রে পুরো বিশ্বে একটি সাধারণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কোরিয়ানরা নিজস্ব পদ্ধতি ব্যবহার করত। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে এখন বৈশ্বিক পদ্ধতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
পুরো বিশ্বে বয়স নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যখন একটি শিশুর জন্ম হয়; জন্মের দিন থেকে পরবর্তী বছরের এই একই দিন পূর্ণ হলে— এক বছর হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু কোরিয়ান পদ্ধতিতে, জন্মের পরপরই ওই শিশুকে এক বছর বয়সী শিশু হিসেবে ধরা হয়। আর প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি ওই বছরের সঙ্গে নতুন করে এক বছর যুক্ত হয়।
এ ছাড়া বয়স নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ‘ক্যালেন্ডার পদ্ধতিও ব্যবহার করে দেশটি। এই পদ্ধতিতে, যখন একটি শিশুর জন্ম হয়—সেদিনকে আন্তর্জাতিক পদ্ধতির মতোই শূন্য দিন হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু যখন শিশুর জন্মের পর প্রথম ১ জানুয়ারি আসে, সেদিন তার বয়সের সঙ্গে ১ বছর যুক্ত করা হয়।
কোরিয়ান বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, আজ বুধবার (২৮ জুন) থেকেই নতুন পদ্ধতি কার্যকর করা হয়েছে। এখন থেকে বিচারিক এবং প্রশাসনিক সবক্ষেত্রে কোরিয়ানদের বয়স আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে ধরা হবে।
গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির পার্লামেন্টে বয়স নির্ণয় পদ্ধতি আইনে পরিবর্তন আনা হয়।
বয়স নির্ণয়ের এই পদ্ধতির কারণে খোদ কোরিয়ানদের মধ্যেই বিভ্রান্তি কাজ করে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কার্যকর করা নতুন পদ্ধতি এসব বিভ্রান্তি দূর করবে।
দেশটিতে স্কুল, সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া ও মদ পানের যে বৈধ বয়স রয়েছে, সেটি নির্ণয় করা হয় ‘ইয়ার এজ’ পদ্ধতিতে। এসব ক্ষেত্রে ‘ইয়ার এজ’ পদ্ধতিই বহাল থাকবে।
উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, যারা ২০০৪ সালে জন্ম নিয়েছিল—হোক সেটি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি অথবা শেষ মাস ডিসেম্বর, তারা ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। কারণ ‘ইয়ার এজ’ পদ্ধতিতে তাদের সবার বয়সই ১৯ বছর হয়ে যাবে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে চোই হাইয়ুন-ঝি নামের এক তরুণী বলেন, ‘কোরিয়ান পদ্ধতিতে আমার বয়স ২০২৪ সালে ৩০ বছর হতো। কিন্তু এখন ৩০ বছরে পা দিতে আমার আরও সময় লাগবে, বিষয়টি পছন্দ হয়েছে।’
রাজধানী সিউলের একটি অফিসে কাজ করা এ তরুণীর বয়স আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে এখন ২৭ বছরে দাঁড়িয়েছে।
মন্তব্য করুন