চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে আরও কয়েক শ মানুষ। হতাহতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সময় সোমবার রাত ১২টার দিকে চীনের গানসু ও কিংহাই প্রদেশের সীমান্ত অঞ্চলে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ছিল ৫ দশমিক ৯ মাত্রার। আর চীনা সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া বলেছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২। এর গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার (ছয় মাইল) গভীরে।
শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের পর সোমবার রাতেই পাশের প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে দ্বিতীয় দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার এই ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জোড়া ভূমিকম্পের পর আরও আফটার শক হতে পারে বলে সতর্ক করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে ভূমিকম্পের পরপরই উদ্ধারকাজ শুরু করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। উত্তর চীনে শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করায় হিমশীতল আবহাওয়ায় আটকা পড়াদের সন্ধানে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের ঢল। উদ্ধারকর্মীরা ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে অনুসন্ধান কাজ করছেন। ভবনের এখানে-সেখানে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। কোথাও কোথাও আংশিক ভেঙে পড়েছে।
গানসু হাউটিয়ান ইমার্জেন্সি রেসকিউ কর্পসের ক্যাপ্টেন শি ওয়ানজিন বলেছেন, ইতিমধ্যে বেশ কয়েক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ পরিচালনার সময় খুব কম।
তিনি বলেন, এই ভূমিকম্পে উদ্ধারকাজের জন্য গোল্ডেন পিরিয়ড খুব হবে। মূলত ভূমিকম্পের মাত্রা ও নিম্ন তাপমাত্রার কারণে সময় কম পাওয়া যাবে। দেশের অধিকাংশ সড়ক বরফে ঢাকা পড়েছে। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেছে। এই তাপমাত্রায় উদ্ধারকাজ চলছে।
সোমবারের ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গানসু প্রদেশের জিশিশান। সেখানে এখন মঙ্গলবার সকাল। এই অঞ্চলে মাইনাস ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উদ্ধারকাজ করছেন দমকলকর্মী, সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।
বেশ কয়েকটি টেকটোনিক প্লেটে অবস্থিত চীন ভূমিকম্প প্রবণ একটি দেশ। গত সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ৬০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। ১৯২০ সালে গানসু প্রদেশে ২০ শতকের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানলে দুই লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।
মন্তব্য করুন