কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৪, ০৫:৪১ পিএম
আপডেট : ০১ জুন ২০২৪, ০৫:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এক রাতেই যেভাবে শেষ হয়েছিল পুরো রাজপরিবার

রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেবের পরিবার। ছবি : সংগৃহীত
রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেবের পরিবার। ছবি : সংগৃহীত

এখন থেকে ২৩ বছর আগের কথা। ২০০১ সালের ১ জুন। নৈশভোজ সারতে একসঙ্গে বসেছেন নেপালের রাজপরিবারের সদস্যরা। মুহূর্তকাল না যেতেই আনন্দঘন পারিবারিক সেই নৈশভোজ পরিণত হয় মৃত্যুর উৎসবে। ওই এক রাতেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নেপালের রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেবের পরিবার। মুহুর্মুহু গুলিতে একে একে নিহত হন রাজা বীরেন্দ্র, রানি ঐশ্বরিয়া, ছেলে নিরাজনসহ রাজপরিবারের ৯ সদস্য। কী ঘটেছিল সেই রাতে?

সেই রাতে নৈশভোজ শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে। সবার আগে ভোজস্থলে হাজির হন যুবরাজ দীপেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব। তিনিই ছিলেন নেপালের ক্রাউন প্রিন্স। অর্থাৎ বাবা বীরেন্দ্রর পর তিনিই হবেন নেপালের রাজা। হাজির হয়েই মদ্যপান করতে শুরু করেন যুবরাজ দীপেন্দ্র। একসময় মাতাল হয়ে টলতে থাকেন তিনি। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোয় একসময় দীপেন্দ্রকে ধরাধরি করে তার শোবার ঘরে দিয়ে আসা হয়। তাকে ছাড়াই নৈশভোজ সারতে থাকেন রাজপরিবারের সদস্যরা।

এদিকে যুবরাজ দীপেন্দ্রের মাথায় কী ভর করেছিল, তা আজও ঠাহর করতে পারেন না ইতিহাসবিদরা। নিজের ঘরে এসে হাসিস দিয়ে তৈরি সিগারেট পান করেন দীপেন্দ্র। এরপর হাসিসের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে বমিও করেন তিনি। এরপর গায়ে চাপান সামরিক পোশাক। নিজের শোবার ঘর থেকে বেরিয়ে যখন তিনি ভোজস্থলের দিকে আগাচ্ছিলেন, তখন তার হাতে একটি এম-১৬ অ্যাসল্ট রাইফেলসহ একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র।

রাত ৯টার দিকে নৈশভোজ স্থলে ফিরে আসেন দীপেন্দ্র। প্রথম গুলিটা ছোড়েন ছাদের দিকে। এরপর মেতে ওঠেন নারকীয় হত্যাযজ্ঞে। প্রথমেই বাবা বীরেন্দ্রকে গুলি করেন দীপেন্দ্র। তারপর একে একে অন্যদের। সেখানে বেশ কয়েকজনকে হত্যার পর তিনি রাজপ্রাসাদের বাগানে যান তার মায়ের খোঁজে। সে সময় ছোট ভাই নিরাজন মাকে রক্ষায় এগিয়ে আসলে সেখানে ছোট ভাই ও মা দুজনকেই গুলি করে হত্যা করেন দীপেন্দ্র।

এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত অন্যরা হলেন বীরেন্দ্রর মেয়ে শ্রুতি, ভাই ধীরেন্দ্র, বোন শান্তি ও শারদা, শারদার স্বামী কুমার খড়গা ও বীরেন্দ্রর আত্মীয় জয়ন্তী। কথিত আছে, পরে দীপেন্দ্র নিজেই নিজেকে গুলি করেন। নিজের গুলিতে আহত হয়ে কোমায় চলে যান তিনি। ঘটনার তিন দিন পর হাসপাতালে মারা যান দীপেন্দ্র। এরপর নিয়ম অনুসারে, নেপালের রাজা হন তার চাচা জ্ঞানেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব।

রাজপ্রাসাদে হত্যাযজ্ঞের ঘটনা তদন্তে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি করা হয়। মাত্র এক সপ্তাহের তদন্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদন দেয় কমিটি। তারা এই হত্যাযজ্ঞের জন্য দীপেন্দ্রকে দায়ী করে। তবে তিনি কেন এই হত্যাযজ্ঞ ঘটালেন, সে বিষয়ে কমিটি কিছুই বলতে পারেনি। ঘটনার এত বছর পরও নেপথ্যের কারণ অজানা রয়ে গেছে এই প্রাসাদ-হত্যাযজ্ঞের। এই ঘটনার সাত বছর পর ২০০৮ সালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করা হয় নেপালে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকায় আসছেন জাকির নায়েক

ছক্কা মেরে ইতিহাস গড়লেন স্মৃতি মান্ধানা!

উপদেষ্টা রিজওয়ানাকে এনসিপি নেতার হুঁশিয়ারি

একটি দল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় : কফিল উদ্দিন 

চাকসু নির্বাচনে নতুন প্রত্যয়ে ছাত্রদল

বন্দর ব্যবসায়ী নেতারা / মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধের ষড়যন্ত্রের অংশ

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নিয়ে ৬ হাজারের বেশি মতামত পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

জুলাইয়ের গাদ্দারদের সব রেকর্ড প্রকাশ করা হবে : মুনতাসির

যে ছয় ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছাড়তে রাজি নয় ইসরায়েল

ময়মনসিংহে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

১০

ধানের শীষের বিজয় মানেই জনগণের মুক্তি : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

১১

রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

১২

বাবর আজমকে নিয়ে ধারাভাষ্যে রমিজ রাজার তির্যক মন্তব্য

১৩

‘সঠিক ও মানসম্পন্ন সংবাদ উপস্থাপনে সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে’

১৪

আন্দরকিল্লা মসজিদ আইকনিক করতে ব্যয় ৩০০ কোটি

১৫

মেসির চেয়েও ধনী শুধু দুইজন ক্রীড়াবিদ!

১৬

প্রবাসীর ছেলেকে দাদা-দাদির কবরের পাশে ঠাঁই দিল না চাচারা

১৭

শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

১৮

বিপিএলের জন্য নতুন রূপে প্রস্তুত হচ্ছে রাজশাহী স্টেডিয়াম

১৯

সাংবাদিককে আটক করে পুলিশের মারধর, গায়েব করার হুমকি

২০
X