রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে। একদিকে ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়ার ক্ষমতা হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন। অন্যদিকে যুদ্ধের কারণে এবার পথে বসতে চলেছে ইউরোপ। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জনানো হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোশেফ বোরেল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চলমান মধ্যপ্রাচ্য সংকট সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্যর্থ হলে তার পরিণতির ওপর জোর দিয়েছেন। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) লে গ্রান্ড কনটিনেন্ট জার্নাল আয়োজিত এক ভূ-রাজনৈতিক সম্মেলনে তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমরা এখন অস্তিত্বের হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি আমরা।
রাশিয়াকে সাম্রাজ্যবাদী ও ঔপনিবেশিক শক্তি উল্লেখ করে তিনি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, কিয়েভের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কারণে কেবল ইউক্রেন না, পুরো ইউরোপের জন্য হুমকি তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, আমরা যদি দ্রুত আমাদের পদক্ষেপ পরিবর্তন না করি অথবা আমাদের সকল সক্ষমতা একসাথে না করি, যদি আমরা পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধে জয়ী হতে দেয় এবং গাজার যুদ্ধ বন্ধ করতে না পারি তাহেলে আমাদের প্রকল্পের অনেক ক্ষতি হবে।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিনির্ধারকদের রাশিয়াকে জয়ী নয়, বরং এ যুদ্ধকে আটকাতে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এর আগে যুদ্ধে বিপাকে পড়ার কথা জানায় ইউক্রেন। ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় সেনা কমান্ড ১৫তম ন্যাশনাল গার্ডের এক কমান্ডার নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, কাগজে-কলমে তাদের পরিকল্পনা দারুণ ছিল। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে সেই পরিকল্পনা কোনো কাজে আসেনি। রুশ সেনাদের বাঙ্কার সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে।
দক্ষিণ ইউক্রেনের প্রত্যন্ত এলাকার একটি সেনা ফাঁড়িতে বসে সিএনএনের সঙ্গে কথা বলেন ওই কমান্ডার। জানান, সম্মুখসমরে রুশ সেনাদের অব্যাহত হামলায় বেকায়দায় পড়ে গেছেন তারা। বলেন, অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে রুশ সেনাদের সঙ্গে ঠিক পেরে উঠছে না ইউক্রেনীয় সেনারা।
ইউক্রেন সেনাদের জন্য বড় এক আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন নতুন রুশ সেনারা। নতুন নিয়োগ পাওয়া এসব সেনার বেশির ভাগই কারাবন্দি ছিলেন। ইউক্রেনীয় সেনাদের তুলনায় তারা অনেক বেশি প্রশিক্ষিত ও অস্ত্রে সজ্জিত। তাদের পেছনে থাকে রুশ সাঁজোয়া বাহিনী। যা তাদের অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছে।
ইউক্রেনীয় ওই কমান্ডার জানান, যুদ্ধের ময়দানে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটছে। রুশরা এখন নিজেরাই ড্রোন তৈরি করছে। শিশুদের খেলনার মতো ড্রোনের ব্যবহার করছে তারা। জানান, ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে ড্রোনের সংখ্যা খুবই কম। সব মিলিয়ে তাদের হাতে যে সমরাস্ত্র রয়েছে, তা দিয়ে আসন্ন শীতে সম্মুখসমরে লড়াই করা আরও কঠিন হয়ে উঠবে বলে শঙ্কা প্রকাশ ইউক্রেনীয় কমান্ডার।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওলেক্সান্ডার তারনাভস্কি বলেছেন, রণক্ষেত্রে ইউক্রেনের সেনারা কামানের গোলার ঘাটতিতে রয়েছে। জানান, বিদেশি সহযোগিতার ঘাটতির কারণে কয়েকটি সামরিক অভিযান পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, মার্কিন কংগ্রেস ইউক্রেনের জন্য বাইডেন প্রস্তাবিত ৬০ বিলিয়ন ডলার এবং হাঙ্গেরি ইইউর প্রস্তাবিত ৫৪.৫ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা আটকে দেওয়ার পর সোমবার এই মন্তব্য করেন ইউক্রেনীয় জেনারেল।
মন্তব্য করুন