জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে শেষ হলো আন্তর্জাতিক গৃহস্থলির নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মেলা বা আমবিয়েন্তে মেসে। বিশ্বের ১৭০টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৮টি কোম্পানী এ মেলা থেকে ৫০ মিলিয়ন ইউরোর অর্ডার নিয়ে ঘরে ফিরলেন।
মেলায় আগত পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, পণ্যের রপ্তানী বহুমূখী করে প্রয়োজনে প্রণোদনা দিয়ে আগামী বছর ৫০ মিলিয়ন ইউরোকে দুই বিলিয়ন করতে চান তার সরকার।
এ মেগা ট্রেড ফেয়ার, আম্বিয়েন্তে, ক্রিসমাসওয়ার্ল্ড এবং ক্রিয়েটিভ ওয়ার্ল্ড নিয়ে গঠিত বিশ্বব্যাপী ভোগ্যপণ্য শিল্পের জন্য এ বছরের মেগা বাণিজ্যমেলার মূলমন্ত্র ছিল ‘সেলিব্রেটিং বিজনেস টুগেদার’। যা বিগত বছরগুলোর রেকর্ড ছাড়িয়ে বৃদ্ধি হয় ১০ শতাংশ। সঙ্গে ৪,৫২৮টি প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন পণ্যের পসরা বসিয়েছিল ৩৬০,০০০ বর্গ মিটারের ২৯টি হলে।
বেশ কিছু দিন ধরে চলা রেল ধর্মঘট সত্ত্বেও, মেসে ফ্রাঙ্কফুর্টের ইতিহাসে মেগা ট্রেড ইভেন্ট ছিল এবারের মেলা। ১ লাখ ৪০ হাজার দর্শনার্থীর ভিড়ে সরগরম ছিল মেলা প্রাঙ্গন। আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কিং এবং অর্ডারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ১৭০টিরও বেশি অংশগ্রহণকারী দেশ এবং অঞ্চলের সঙ্গে শিল্পের ওয়ানস্টপ শপ বাজার হিসেবে এ মেলা পরিচিত ব্যবসায়ীদের কাছে।
বর্তমান পৃথিবীর চ্যালেঞ্জগুলির অভিযোজন, অনুপ্রেরণা এবং সমাধান ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। এবারের মেলায় এসেছিলেন বাংলাদেশের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বাংলাদেশ থেকে আসা ইপিবির মাধ্যমে ১২টি সহ সর্বমোট ৪৮টি কোম্পানির স্টল ঘুরে দেখেন ও মতবিনিময় করেন। মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও মন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, আগামী মেলায় তার সরকার বহুমূখী পণ্য রপ্তানীর মাধ্যমে দুই বিলিয়ন ইউরো আয় করতে চায়। মেলায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন জার্মানিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোশারেফ হোসেন ভূঁইয়া। মেলায় আকিজ গ্রুপের স্বত্বাধীকারী তার গায়ে পরা পাটের কোট মন্ত্রীকে দেখান।
বিডি ক্রিয়েশনের স্বত্বাধীকারী মুন্না আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পণ্য উৎপাদনের তাগিদ দেন। আর্টিশান সিরামিকসের সিও মামুনুর রশিদ মনে করেন, ফ্রাংকফোট ফেয়ার পণ্য বাজারজাত করার বেস্ট প্লেজ। তিনি এবারের মেলা থেকে দেড় মিলিয়ন ইউরোর অর্ডার পেয়েছেন। রংপুরের কারুপণ্যের সিও সেলিম আহমেদ বলেন, তিনি ২২ হাজার শ্রমিকের পণ্য ৭৭টি দেশে রপ্তানী করেন। ভারত ও ইথিওপিয়ার দুজন উদ্যোক্তা মনে করেন, বিশ্ব যুদ্ধ অবস্থা ও জ্বালানি সংকটে ভালো ব্যবসা হচ্ছে না। ইপিবির মাধ্যমে আসা ব্যবসায়ীরা তেমন সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেন। তবে মেলার দক্ষিণ এশিয়ার সিও ওমর সালাউদ্দিন সন্তোষ প্রকাশ করেন। সবশেষে সুরের তালে তালে দর্শনার্থীদের বিদায় দেন মেলা কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য করুন