কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ১০:০০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্ত্রীর নাক কেন এত সুন্দর, রাগে কামড়ে দিলেন স্বামী

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

সৌন্দর্য প্রশংসিত হওয়ার কথা, ভালোবাসার কথা। কিন্তু কখনও কখনও সৌন্দর্যই হয়ে ওঠে হিংসার কারণ। এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার শান্তিপুর থানার অন্তর্গত বেরপাড়া এলাকায়।

সেখানে স্ত্রী মধু খাতুনের সৌন্দর্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে স্বামী বাপন শেখ মাঝরাতে তার স্ত্রীর নাক কামড়ে দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মধুকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। এই নৃশংস ঘটনার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত স্বামীকে।

প্রায় ৯ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন বাপন শেখ ও মধু খাতুন। শুরুতে সংসার ছিল শান্তিপূর্ণ। তাদের আট বছরের এক কন্যা সন্তানও রয়েছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাপনের আচরণে পরিবর্তন আসে।

স্ত্রীর সৌন্দর্য নিয়ে তিনি সন্দেহ ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন। বিশেষ করে স্ত্রীর নাকের সৌন্দর্য নিয়ে তিনি প্রায়ই মন্তব্য করতেন—তোর নাকটা এত সুন্দর কেন? কেউ প্রেমে পড়ে যাবে না তো?

প্রথমে এসব কথাকে মধু হালকাভাবে নিলেও ধীরে ধীরে তা ভয়ংকর রূপ নেয়। বাপন প্রায়ই বলতেন, তোর নাকটা একদিন কামড়ে খেয়ে নেব! শুধু কথাতেই সীমাবদ্ধ থাকেননি, একবার স্ত্রীকে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারার হুমকিও দেন।

বৃহস্পতিবার (১ মে) গভীর রাতে ঘটল সেই ভয়ংকর ঘটনা। স্ত্রী মধু যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন মদ্যপ অবস্থায় স্বামী বাপন আচমকা তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং নাকে কামড় বসান। ব্যথায় চিৎকার করে ওঠেন মধু, ঘুম ভেঙে বুঝতে পারেন তার নাক রক্তে ভেসে যাচ্ছে। বাধা দিতে গেলে স্বামী তার আঙুলেও কামড় দেন বলে অভিযোগ। কোনো রকমে নিজেকে মুক্ত করে বাইরে পালিয়ে যান তিনি।

পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার নাকে গভীর ক্ষত হয়েছে, যা অস্ত্রোপচার করে সেলাই করতে হয়েছে। চিকিৎসার পর ব্যান্ডেজ করা হয়।

সামান্য সুস্থ হওয়ার পরই মধু শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগে বলেন, স্বামী সবসময় আমার রূপ নিয়ে সন্দেহ করত। ভাবত, আমার সৌন্দর্য দেখে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে। আর সেই সন্দেহ থেকেই সে আমার নাক কামড়েছে।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে শান্তিপুর থানার পুলিশ বাপন শেখকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে আছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। অনেকে বলেন, মধু খুব ভালো মেয়ে। কারও সঙ্গে ঝামেলা নেই। ওর ওপর এমন বর্বরোচিত হামলা মেনে নেওয়া যায় না। অনেকে এ ঘটনাকে নারী নির্যাতনের জঘন্য উদাহরণ হিসেবে দেখছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতা ও ঈর্ষা থেকে এ ধরনের মানসিক বিকার তৈরি হতে পারে। তবে তার নাম যদি হয় ভালোবাসা—তাহলে তা রক্তাক্ত হয় না। এটি নিছক ভালোবাসার অভাব, বিকৃত মানসিকতা ও সহিংসতার ফল।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেবে ঢাকা উত্তর সিটি

চট্টগ্রামে হোমিওপ্যাথিক বিএইচএমএস কোর্স চালু করবে চসিক

২০০ রানের ওপরে দলকে নিয়ে যেতে চান লিটন

ইরানের ওপর ফের ৩ দেশের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা

উপসচিব পদে ২৬২ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি

গেন্ডারিয়ায় শতবর্ষী পুকুর উদ্ধারে রাজউকের অভিযান

জুলাই জাতীয় সনদ / আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে আবারও বসবে ঐকমত্য কমিশন

ইস্ট অ্যাংলিয়া প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইউজিসি’র বৈঠক

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপের প্রতিক্রিয়া জানাল জামায়াতে ইসলামী

প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালীন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি নির্দেশনা

১০

তারকা অলরাউন্ডারকে নিয়েই এশিয়া কাপের জন্য লঙ্কানদের দল ঘোষণা

১১

একাদশে ভর্তির দ্বিতীয় ধাপের ফল প্রকাশ, যেভাবে দেখা যাবে 

১২

তিন যুবকের কোমরে মিলল আট কোটি টাকার স্বর্ণ

১৩

হাসপাতালে খালেদা জিয়া

১৪

ইসির রোডম্যাপে দেশ নির্বাচনের দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল : সমমনা জোট

১৫

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ শাবির ৮৫ শিক্ষকের

১৬

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা চুয়েটের

১৭

আল আরাফা ব্যাংকের চাকরিচ্যুত ৩ কর্মকর্তা রিমান্ডে, কারাগারে ৮

১৮

দাবি আদায় হয়নি, নতুন ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

১৯

রমনা বিভাগের ডিসিকে নিয়ে অপপ্রচার

২০
X