ভারতের অরুণাচল ও আকসাই চীনকে নিজেদের দাবি করে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে চীন। শুধু ভারতের দুই প্রদেশই নয়, এবারের মানচিত্রে তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগরকে নিজেদের বলে দাবি করেছে বেইজিং। দক্ষিণ চীন সাগরের যে অংশ চীন নিজেদের বলছে, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ব্রুনেই সেই অংশের দাবিদার। খবর এনডিটিভি।
আগামী সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে উদীয়মান অর্থনীতির জোট জি-২০-এর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ওই সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের যোগদানের কথা রয়েছে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন সাইডলাইনে এক ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও শি জিনপিং। বৈঠকে শি জিনপিংয়ের কাছে দুই দেশের অমীমাংসিত সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন মোদি। এরই মধ্যে চীন মানচিত্র প্রকাশ করে নতুন বিতর্ক উসকে দিল।
চীনা সংবাদমাধ্যমের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, জাতীয় জরিপ ও মানচিত্র প্রচার দিবস উপলক্ষে চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নতুন মানচিত্রের ছবি পোস্ট করে চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, চীন ও অন্যান্য দেশের সীমারেখা মেনেই এই মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে।
তবে চীনের এই নতুন মানচিত্র খারিজ করে দিয়েছে ভারত সরকার। এ বিষয়ে এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, এটা চীনের পুরোনো অভ্যাস। চীনাদের এমন দাবিতে কিছু যায়-আসে না।
তিনি বলেন, তাদের ভূখণ্ড নয়, এমন জমি নিয়ে চীন মানচিত্র তৈরি করেছে। এটি তাদের পুরোনো অভ্যাস। ভারতের অংশ নিয়ে মানচিত্র তৈরি করলে... এতে কিছু পরিবর্তন হয়ে যাবে না। আমাদের অঞ্চল নিয়ে আমাদের সরকারের ধারণা খুব স্পষ্ট। অযৌক্তিক দাবি করলেই অন্যের অঞ্চল আপনার হয়ে যাবে না।
অরুণাচল প্রদেশকে দক্ষিণ তিব্বত বলে থাকে বেইজিং। গত এপ্রিলে অরুণাচলের ১১টি এলাকার নাম চীনা ভাষায় পরিবর্তন করেছিল বেইজিং। তখনও চীনের এমন পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে দেয় ভারত সরকার। তখন ভারত জানিয়েছিল, অরুণাচল তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সব সময় থাকবে।
গত বছরের ডিসেম্বরে অরুণাচলের তাওয়াং সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এএলসি) বরাবার চীনা ও ভারতীয় সেনা মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। এ ঘটনার পর এএলসি ও অরুণাচলে সামরিক নিপাত্তা জোরদার করে ভারত।
তখন ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং অভিযোগ করে বলেছিলেন, চীন ‘একতরফাভাবে’ সীমান্ত স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে। এরপর গত মাসে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেন, পরিস্থিতি এখনো খুবই নাজুক এবং বেশ বিপজ্জনক।
মন্তব্য করুন