শীত মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই তুষার শুভ্রতায় মোড়ানো কাশ্মীর যেন রূপকথার কোনো ছবি। বরফে ঢাকা পাহাড় আর ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে ভিজে প্রকৃতির সৌন্দর্য আরও বেড়ে উঠেছে। তবে এই হঠাৎ তুষারপাত ও বৃষ্টির ফলে দেখা দিয়েছে জনজীবনে কিছুটা দুর্ভোগও।
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চলে সম্প্রতি তুষারপাত ও নিম্নভূমির এলাকাগুলোতে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপোরা জেলার গুরেজ উপত্যকার তুলাইল ও রাজদান টপ এলাকায় বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তুষারপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
একই সঙ্গে দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ানের পীর কি গালি এবং শ্রীনগর-লেহ হাইওয়ের জোজিলা পাসেও বরফ পড়েছে। শনিবার (৩১ মে) ডেকান হেরাল্ডসহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বান্দিপোরা-গুরেজ সড়ক সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় কাশ্মীর উপত্যকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উচ্চাঞ্চলে হালকা তুষারপাতও হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা।
এই প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ফলে স্থানীয় যোগাযোগব্যবস্থা বিশেষ করে পার্বত্য সড়কগুলোতে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অনেক জায়গায় যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে। তবে কৃষিজমি ও জলাধারগুলোর জন্য এই বৃষ্টিপাত উপকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পর্যটকদের অনুপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। বরফে মোড়ানো সৌন্দর্য দেখতে পারলেও এখনো কাশ্মীরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটকের আগমন দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটক ও স্থানীয়দের উচ্চভূমি বা হিমবাহপ্রবণ অঞ্চলে ভ্রমণের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, কারণ এসব এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
তুষারপাতের সৌন্দর্যে প্রকৃতি যখন অপার রূপে ধরা দিয়েছে, তখন স্থানীয়দের জন্য এটি ঠান্ডা ও দুর্ভোগের বার্তাও বয়ে এনেছে। আবহাওয়া বিভাগ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে নতুন সতর্কতা জারি করার কথাও জানিয়েছে।
কাশ্মীরবাসীদের জন্য এ যেন শীতের আগমনী বার্তা, যেখানে প্রকৃতি যেমন মোহিত করছে, তেমনি মনে করিয়ে দিচ্ছে পাহাড়ি জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোও।
মন্তব্য করুন