ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রার কিছু সময় পরই বিধ্বস্ত হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান। অন্তত ২৪২ যাত্রী নিয়ে একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রবাসে আছড়ে পড়ে দেশটির বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানটি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ২টা ২৫ মিনিটে আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছাকাছি মেঘানিনগর আবাসিক এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় কত যাত্রী হতাহত হয়েছেন, তাৎক্ষণিকভাবে তা এখনো জানা যায়নি। তবে দুর্ঘটনায় বহু প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিধ্বস্তের আগে পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে (এটিসি) ‘মে ডে কল’ দিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, ‘মেডে কল’ কী?
বিমান পরিষেবার পরিভাষায় ‘মেডে কল’ হলো ‘বিপৎসংকেত’। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পাইলট যখন কোনো বিপদের আঁচ করেন, তখন এই কল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফরাসি শব্দ ‘মেইডার’ থেকে ‘মেডে’ শব্দটি এসেছে। যার অর্থ হলো, ‘আমাকে সাহায্য করুন’।
সাধারণত এটিসি এবং এর আওতায় থাকা আকাশপথে কোনো বিমানের মধ্যে রেডিও যোগাযোগকে ‘মেডে কল’ বলে। এর মাধ্যমে দ্রুত সাহায্যের জন্য বার্তা পাঠানো হয়।
কখন ‘মেডে কল’ পাঠানো হয়
সাধারণত বিমানের ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দিলে, বিমান দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে পড়লে, বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি হলে এবং উড়ন্ত বিমানের মধ্যে হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে বা জরুরি কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে এই ‘মেডে কল’ করা হয়।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, গুজরাটের বল্লভভাই প্যাটেল বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছু সময় পরই বিপদ বুঝতে পারেন পাইলট ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল। এ সময় তিনি বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে (এটিসি) ‘মেডে কল’ জরুরি সাহায্যের আবেদন জানান। তবে এর কিছু সময়ের মধ্যেই সবকিছু নিস্তব্ধ হয়ে যায়। এটিসি থেকে যোগাযোগ করা হলেও আর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
ভারতের বেসরকারি বিমান চলাচল অধিদপ্তরও নিশ্চিত করেছে, বিমানটির সহ-পাইলট ‘মেডে কল’ করেছিলেন। কিন্তু এরপর বিমান থেকে আর কোনো সাড়া আসেনি।
এ ব্যাপারে বেসরকারি বিমান চলাচল অধিদপ্তর বিবৃতিতে বলেছে, বিমানটিতে ২৪২ আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন পাইলট এবং ১০ জন কেবিন ক্রু ছিলেন। বিমানটি ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়ালের কমান্ডে ছিল। সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্ডার।
এটিসির তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি আহমেদাবাদ থেকে ১টা ৩৯ মিনিটে রানওয়ে ২৩ থেকে উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ পর সহ-পাইলট মে ডে কল করেন। কিন্তু এরপর বিমান থেকে আর কোনো সাড়া আসেনি। কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানটি বিমানবন্দরের পরিসীমার মধ্যে আছড়ে পড়ে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ভারী ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।
মন্তব্য করুন