কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ০১:০০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গাজার ‘সন্তানরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে’

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়ায় বসবাসরত মাহমুদ আল-হাও। চার সন্তানের এই বাবা প্রতিদিন ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে খাবারের খোঁজে বের হন। তিনি জানান, কখনও এক প্লেট স্যুপ পান, আবার কখনও খালি হাতে ফিরতে হয়।

তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে অসুস্থ। তার জন্য কিছুই করতে পারছি না। এখানে রুটি নেই, কিছুই নেই।’

মাহমুদ আরও বলেন, ‘গতকাল তো কিছুই ছিল না। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, আজ অন্তত কিছু আছে।’ মাহমুদ বলেন ‘আমাদের সন্তানরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে। আমি চাই, সবাই আমাদের পাশে দাঁড়াক।’

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজার ৯০% শিশু খাদ্য সংকটে ভুগছে। শিশুরা ঠিকমতো খাবার পাচ্ছে না, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং চিকিৎসা সেবা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

আমাদের সন্তানরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে। আমি চাই, সবাই আমাদের পাশে দাঁড়াক।

গাজার এই মানবিক সংকটের মধ্যে মাহমুদ আল-হাও-এর মতো অসংখ্য পরিবার আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে প্রতিদিন বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছে।

এদিকে ইসরায়েলি অবরোধের মধ্যে গাজায় প্রবেশ করা সামান্য কিছু ত্রাণের ট্রাককে ‘সমুদ্রের এক ফোঁটা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, বর্তমানে যে সহায়তা ঢুকছে তা মোটেও যথেষ্ট নয়।

গাজার জন্য নির্ধারিত হাজার হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক এখনো মিশরের সীমান্তে আটকে আছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, লম্বা সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকগুলো গাজার দিকে প্রবেশের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে, কিন্তু ইসরায়েল এখনো অধিকাংশ ত্রাণ সামগ্রীকে ঢুকতে দিচ্ছে না।

ইসরায়েল ১১ সপ্তাহের অবরোধ কিছুটা শিথিল করলেও, বাস্তবে এই ত্রাণ প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। ফলে গাজায় থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং জ্বালানি পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় বর্তমানে যা ত্রাণ ঢুকছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় ‘সমুদ্রে এক ফোঁটা পানির মতো। এভাবে চলতে থাকলে গাজায় একটি পূর্ণমাত্রার মানবিক বিপর্যয় অনিবার্য।

আল জাজিরার সাংবাদিক গ্যাব্রিয়েল এলিজন্ডোর মতে, বর্তমানে দিনে মাত্র ৯০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে। অথচ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০টি ট্রাক ঢুকত এই উপত্যকায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৬৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ২১ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজারো মানুষ এখনো নিখোঁজ এবং মৃত হিসেবে ধরা হলে মোট মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্বীকৃতি-আশ্রয় ও যৌথভাবে মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হয়েছে ভারত : জামুকা

‘গন্তব্যহীন এই যাত্রায় নীরবতাই একমাত্র সঙ্গী’

বিপিএল: এবার আরও বড় চমক দেখাল নোয়াখালী এক্সপ্রেস

পৃথিবী কি এত গরম হয়ে যাচ্ছে যে মানুষ থাকতে পারবে না?

খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেওয়া হবে কি না সিদ্ধান্ত রাতে

রফিককে গুলি করে হত্যার নেপথ্যে যা জানা গেল

বিশ্বকাপে ‘সহজ’ গ্রুপে আর্জেন্টিনা, কী বললেন কোচ

জলবায়ু পরিবর্তনে বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে কর্মক্ষেত্র

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় ছাত্রদল নেতা মিথুনের সদকায়ে জারিয়া

শীতের দাপটে জবুথবু জনজীবন 

১০

‘জিনের বাদশাহ’ সেজে মহিদুল হাতিয়ে নেন ১২ লাখ টাকা

১১

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালে চাকরির সুযোগ

১২

স্বর্ণ কিনবেন, জেনে নিন আজকের বাজারদর

১৩

অলিখিত ‘ফাইনালে’ মাঠে নামছে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা

১৪

শীতে গোসল করার উপযুক্ত সময় কোনটি?

১৫

বুড়ি তিস্তা খনন প্রকল্পে ক্ষুব্ধ কৃষকরা, প্রতিবাদে মশাল মিছিল

১৬

বিজয় দিবস প্রীতি ম্যাচের জন্য / সৌম্য সরকারকে নিয়ে শক্তিশালী দল ঘোষণা, নেই লিটন

১৭

যশোরেই প্রথম উড়েছিল বাংলাদেশের বিজয় নিশান

১৮

ভারতে ফেরত পাঠানো হলো সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবিকে

১৯

বিপিএল শুরুর আগেই মিলল দুঃসংবাদ

২০
X