বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ। খোদ মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থেকেও মুক্তি পেয়েছে দেশটি। এবার তাদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ সৌদি আরব ও কাতার। তারা জানিয়েছে, সিরিয়ার সরকারি কর্মচারীদের বেতন দেবে এ দুই দেশ।
সম্প্রতি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ জানান, সৌদি আরব কাতারের সঙ্গে যৌথভাবে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে। দামেস্কে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানির সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি রিয়াদ ও দোহার প্রদান করা আর্থিক সহায়তার পরিমাণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে, এই উদ্যোগ কাতারের সিরিয়ার সরকারি খাতে পূর্বে দেওয়া আর্থিক সহায়তার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। সৌদি আরব ও কাতারের যৌথ বিবৃতিতে শনিবার জানানো হয়, এই আর্থিক সহায়তা তিন মাস ধরে প্রদান করা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই পদক্ষেপ গত এপ্রিলে সৌদি আরব ও কাতারের ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কাছে সিরিয়ার প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া পরিশোধের পরে নেওয়া হয়েছে।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গত ডিসেম্বরে সিরিয়ার ইসলামপন্থি নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অপ্রত্যাশিত ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ পরে এসেছে। এই সরকার সাবেক নেতা বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে তার সাম্প্রতিক সফরের সময় এই সিদ্ধান্ত নেন এবং জানান, এটি সৌদি আরবের যুবরাজের অনুরোধে এটি করা হয়েছে। সৌদি এ নিষেধাজ্ঞা উঠানোর প্রধান পক্ষপাতী ছিল। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও সম্প্রতি সিরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।
প্রিন্স ফয়সাল সিরিয়ার ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলতে তার দেশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, সৌদি আরব সিরিয়ার পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে অন্যতম প্রধান সমর্থক হিসেবে থাকবে। তিনি জানান, তিনি সৌদি আরবের একটি উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এসেছেন, যারা সিরিয়ার পক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে আলোচনা করবেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী দিনগুলোতে সৌদি ব্যবসায়ীরা জ্বালানি, কৃষি, অবকাঠামো এবং অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনার জন্য সিরিয়া সফর করবেন।
আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বাধীন সুন্নি ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের হাতে আসাদের পতনের পর সিরিয়ার নেতৃত্ব আরব ও পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে। তারা আশা করছে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর উপসাগরীয় প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সাহায্য ও বিনিয়োগের প্রবাহ সংঘাতে বিধ্বস্ত এই রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনে সহায়তা করবে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা’র প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমাদ আল-সাবাহর আমন্ত্রণে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা রোববার কুয়েত সফর করবেন। প্রেসিডেন্টের দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফরে শারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে যৌথ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবেন।
মন্তব্য করুন