কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
অ্যামনেস্টির মহাসচিব

‘গাজায় বর্বরতার মধ্যেই মুখোশ খুলে গেছে পশ্চিমাদের’

ধ্বংসস্তূপে গাজার শিশুটি চোখ দিয়ে যা দেখছে, বিশ্ব নেতারা তা দেখতে পাচ্ছেন কি? ছবি : সংগৃহীত
ধ্বংসস্তূপে গাজার শিশুটি চোখ দিয়ে যা দেখছে, বিশ্ব নেতারা তা দেখতে পাচ্ছেন কি? ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান নৃশংসতা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা বিশ্বের বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক আগেই বিলীন হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড।

শনিবার (৩১ মে) এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের জবাবে বলেন, সত্যি? বিশ্বাসযোগ্যতা তো ১৯ মাস আগেই হারিয়েছে— ইসরায়েলের গণহত্যায় পশ্চিমা বিশ্বের মদদ ও নিষ্ক্রিয়তার কারণেই। খবর আল জাজিরা।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ সম্প্রতি বলেছিলেন, ইউক্রেন ও গাজার যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে। ক্যালামার্ডের মতে, এ বক্তব্য অতিমাত্রায় বিলম্বিত ও বাস্তবতা বিচ্যুত।

তিনি আরও বলেন, এখন কেবল কথায় কিছু হবে না— পশ্চিমার বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে দরকার কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ।

অ্যাগনেস ক্যালামার্ড পশ্চিমা বিশ্বের কাছে ছয়টি সুস্পষ্ট ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন, যা তাদের নৈতিক অবস্থান পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া এবং সেখানে সকল প্রকার অস্ত্র সরবরাহ—পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ—সম্পূর্ণ বন্ধ করা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইসরায়েল বাণিজ্য ও সহযোগিতা চুক্তি বাতিল করা।

এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন, যার মধ্যে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও বিনিয়োগ প্রত্যাহার। আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (আইসিসি) জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাগুলো কার্যকর করা। যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের—তাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকলেও—জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনা। হামাসের হাতে আটক ব্যক্তিদের পাশাপাশি ইসরায়েলের বেআইনিভাবে আটক রাখা সকল ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া।

প্রসঙ্গত, গত বছর জাতিসংঘ-সমর্থিত আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী ইয়াওভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ওই বছরের মে মাসে আইসিসি’র প্রধান কৌঁসুলি করিম খান এসব পরোয়ানার আবেদন করেছিলেন।

উল্লেখ্য, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৩৮১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪ জন আহত হয়েছেন। পুরো উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। খাবার, পানি ও চিকিৎসা সেবার তীব্র সংকটের কারণে হাজারো মানুষ প্রতিদিনই মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এই প্রেক্ষাপটেই অ্যামনেস্টির মহাসচিব বলেছেন, এই নিস্তব্ধতা, পক্ষপাত ও দ্বিমুখী নীতিই প্রমাণ করেছে— গাজায় বর্বরতার মধ্যেই পশ্চিমা মুখোশ খুলে গেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সকালে মৌরি ভেজানো পানি খেলে শরীরে যেসব পরিবর্তন ঘটে

পিরোজপুরের নৌকা কিনতে চায় আলজেরিয়া, বিনিয়োগেও আগ্রহী

‘ইলিশের দাম শুনেই গলা শুকিয়ে আসে’

মুক্তির অপেক্ষায় পবণ কল্যাণের ‘হরি হারা বীরা মালু’

মিয়ানমারে জান্তা বাহিনীর হামলায় নিহত ৫

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে আঞ্চলিক প্রভাব রক্ষায় কৌশলী চীন

জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ সফল করতে মাঠে প্রস্তুত ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সিরিয়া-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি

স্কয়ার গ্রুপে চাকরির সুযোগ

বাফুফে সহসভাপতি / ফুটবলে দর্শক পাওয়া যেত না, এখন টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না 

১০

৫৪ বছর ধরে রশি টেনে ডিঙি নৌকায় নদী পারাপার

১১

সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা

১২

খেলা বন্ধ হয়নি, আরেকটা গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নেন : নাহিদ 

১৩

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা

১৪

১৯ জুলাই : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৫

শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৬

১৯ জুলাই : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৭

স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ২৫ কেজি দুধ দিয়ে গোসল 

১৮

সেনাবাহিনীর হাতে ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক 

১৯

ইবি ছাত্রের রহস্যজন্যক মৃত্যুর তদন্তের দাবিতে ছাত্রশিবিরের টর্চ মিছিল

২০
X