কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫, ১১:৩৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঈদের দিনে কোরবানি নয়, গাজায় চলবে ক্ষুধা আর কান্নার উৎসব

রান্না করা একটুখানি খাবারের আশায় অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনি শিশুরা- গাজায় মানবিক সংকটের প্রতিচ্ছবি। ছবি : সংগৃহীত
রান্না করা একটুখানি খাবারের আশায় অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনি শিশুরা- গাজায় মানবিক সংকটের প্রতিচ্ছবি। ছবি : সংগৃহীত

ঈদ মানেই খুশি, উৎসব আর ত্যাগের মহিমা। কিন্তু ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ঈদুল আজহা এবার আসছে শুধুই কান্না, ক্ষুধা আর রক্তের স্মৃতি বয়ে। ইসরায়েলের প্রায় দুই বছর ধরে চলা অব্যাহত হামলা ও অবরোধে বিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে ঈদের ছোঁয়াও যেন নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।

গাজার আকাশজুড়ে এখনও ধোঁয়া। বাতাসে এখনও বারুদের গন্ধ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর পর থেকে ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সোয়া লাখ। শুধু হামলাই নয়, গাজায় প্রবেশ করা সব ধরনের ত্রাণ, খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আটকে দিয়ে এক বিভীষিকাময় অবরোধ সৃষ্টি করেছে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি।

এই নিষ্ঠুরতা ঈদের খুশিতেও ছায়া ফেলেছে। লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ বছর গাজায় কোরবানির পশু প্রবেশের অনুমতি মেলেনি। গাজার প্রাণী ব্যবসায়ী ও খামারিরা বলছেন, সীমিত সংখ্যক পশু থাকলেও সেগুলোর দাম এত বেশি যে, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

গাজার বাসিন্দা আবু হাতিম আল-জারকা জানান, গত বছরের অক্টোবর থেকে কোনো পশু গাজায় আসেনি। যে কয়টি পশু আছে, সেগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় পানি পর্যন্ত জোগাড় করতে পারছেন না। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই এলাকায় পশুপালনও প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

ফলে এবারের ঈদে কোরবানির তো প্রশ্নই ওঠে না। বরং অধিকাংশ ফিলিস্তিনি পরিবার হয়তো একটি টুকরো মাংস দেখার স্বপ্নটুকুও দেখতে পারবে না। বাস্তুচ্যুত বহু ফিলিস্তিনি জানিয়েছেন, তারা ঈদের কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেননি। খোলা আকাশের নিচে, খাদ্যবিহীন অবস্থায় ঈদের নামাজ পড়ার পর দিনের বাকি সময়টুকু কাটবে অনাহারে।

গাজার বাজারগুলোতেও নেই কোনো উৎসবের আমেজ। ইসরায়েলের আরোপিত দুর্ভিক্ষের বাস্তবতায় খাদ্য ও সবজির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। অনেকেই মাসের পর মাস মাংসের মুখ দেখেননি।

এই বাস্তবতায় গাজার মানুষের কাছে ঈদ মানে শুধু একটুখানি বেঁচে থাকার চেষ্টা। কোরবানির পশুর বদলে তারা ত্যাগ করছেন আর্তনাদ, উৎসবের বদলে শুনছেন শোকের সুর। এ যেন ঈদের দিনেও মৃত্যু আর ক্ষুধার সঙ্গে এক অসহায় জনগোষ্ঠীর নীরব যুদ্ধ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিচারক-রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বেকারত্ব দূর করতে ব্যর্থ : শিবির সেক্রেটারি

জাতীয় নারী ফুটবলার সাগরিকার বাড়িতে চুরি

বোরকা পরা ছাত্রীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে দেখানোকে ঘিরে বিতর্ক

উদ্বেগ জানালেন আজহারি

পাঁচ দিন সাগরে ভেসে জীবিত ফিরলেন মোরশেদ

বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস সিরিজে থাকছে নারী আম্পায়ার

মওলানা ভাসানী সেতুর স্বপ্নযাত্রা শুরু

বিএনপি কর্মীদের নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিলেন জয়

খাঁচায় বন্দি রেখে পাখি পালন করা কি জায়েজ আছে?

১০

সাবেক স্ত্রীকে হত্যার পর যুবকের কাণ্ড

১১

বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

১২

নদীতে ভাসছিল নিখোঁজ চালকের মরদেহ, উধাও অটো

১৩

টাইফয়েড টিকার রেজিস্ট্রেশন মোবাইল থেকে যেভাবে করবেন

১৪

দুদকের দুই উপ-পরিচালক বরখাস্ত

১৫

দলের স্বার্থে খেলে কপাল পুড়ল দুই ক্রিকেটারের, দাবি অশ্বিনের

১৬

মহাখালীর সাত তলা বস্তিতে ভয়াবহ আগুন 

১৭

আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ১২টা হাতি মরে গেছে : রিজওয়ানা

১৮

প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

১৯

ঢাবির ১৮ হল সংসদের প্রার্থী ঘোষণা ছাত্রদলের

২০
X